ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানটি বিধ্বস্তের আসল কারণ জানিয়েছে ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো। গতকাল তারা প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুর্ঘটনার আগ মুহূর্তে বিমানটির জ্বালানি সরবরাহের সুইচ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে ইঞ্জিনে জ্বালানি যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সূত্র : এনডিটিভি।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন বিমানটি একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে আছড়ে পড়লে সেখানেও বহু মানুষ হতাহত হন। অপরদিকে বিমানটির ২৪২ আরোহীর একজন বাদে বাকি সবাই প্রাণ হারান। তদন্ত ব্যুরো বলছে, তারা বিমানের ব্ল্যাকবক্স থেকে সর্বশেষ তথ্য খুঁজে বের করতে সমর্থ হয়েছেন। তারা বলেছেন, বিমানের জ্বালানি সরবরাহের যে দুটি সুইচ আছে দুটিই এক সেকেন্ডের কম সময়ের ব্যবধানে চালু (রান) থেকে বন্ধ (কাট অফ) হয়ে যায়। ওই সময় বিমানটির গতি ১৮০ নটে পৌঁছেছিল। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, উড্ডয়নের তিন সেকেন্ড পরেই বিমানটির ইঞ্জিনের জ্বালানি সুইচগুলো প্রায় একই সঙ্গে ‘চালু’ অবস্থা থেকে ‘বন্ধ’ অবস্থায় চলে যায়। ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারণে বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনারটির গতি দ্রুত কমতে শুরু করে এবং নিচের দিকে নামতে থাকে। এ সময় ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে এক পাইলটকে অপর পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, তিনি কেন জ্বালানি বন্ধ করেছেন। জবাবে ‘অপর পাইলট বলেন, তিনি জ্বালানি বন্ধ করেননি।’ এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করা হলেও ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়। ইঞ্জিন রিস্টার্টের প্রক্রিয়ায় থাকতেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সে সময় বিমানের র্যাম এয়ার টারবাইন (আরএএম) চালু হয়ে যায়, যা জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার অংশ।
বিমানটি রানওয়ে পার হয়ে খুব দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে ফেলে এবং পাশের বিজে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হোস্টেলে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। তদন্তকারীরা বিমানের ব্ল্যাক বক্স থেকে উদ্ধার করা ৪৯ ঘণ্টার ফ্লাইট ডেটা ও দুই ঘণ্টার ককপিট অডিও বিশ্লেষণ করে এই তথ্য খুঁজে বের করতে সমর্থ হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা যে, সেগুলো সহজে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ডেভিড সোসি বলেন, ‘এই সুইচগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নাড়াচাড়া করার জন্য তৈরি। দুই ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ অনিচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত বিরল।’