ঝিমিয়ে পড়া রোহিঙ্গা ইস্যু আবার সামনে আনতে চায় সরকার। এজন্য চলতি মাসের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়োজন করা হবে চারটি সম্মেলন। বাংলাদেশ চায় স্থায়ী সমাধান হিসেবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে। এজন্য পাশে চায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ কথা জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে
ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, সৌদি আরবসহ ৫০টিরও বেশি মিশনের কূটনীতিকরা অংশ নেন।
জানা যায়, জাতিসংঘ, কাতার এবং বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্মেলনগুলো অবহিত করতে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে ‘অংশীজন সংলাপ : রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে পারেন। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে অনুষ্ঠিত হবে রোহিঙ্গাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন। আর কাতারের দোহায় ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে রোহিঙ্গাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এসব সম্মেলনে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রোহিঙ্গাবিষয়ক কয়েকজন আন্তর্জাতিক দূত, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। গতকাল ব্রিফিং শেষে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক এজেন্ডা থেকে খসে পড়ছিল। সে অবস্থা থেকে গত বছর প্রধান উপদেষ্টা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের জন্য জাতিসংঘের সব সদস্যকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সাড়া পেয়েছি। সর্বসম্মতভাবে এ সম্মেলন আয়োজনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয়। ১০৬টি দেশ এতে কো-স্পন্সর করে। সুতরাং এখন আন্তর্জাতিক সমর্থন যথেষ্ট আছে। খলিলুর রহমান বলেন, এ সম্মেলন হলো রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য আশু সমাধানের পথ নির্দেশিকা দেওয়ার একটি স্থায়ী সুযোগ। আমরা সেই কারণে রোহিঙ্গাদের ভয়েস, তাদের কথা, তাদের আশা-আকাক্সক্ষা, তাদের স্বপ্ন, এসব আমরা সেখানে নিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো সম্মেলনে অংশ নেয়, তবে রোহিঙ্গারা তো আর সদস্য নয়। তবে কাউকে তো তাদের ভয়েসটা নিয়ে যেতে হবে। আমরা এ ধরনের প্রক্রিয়াতে সেই কাজটি করছি। আমরা আন্তর্জাতিক কমিউনিটিতে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, সম্মেলনে যারা অংশ নেবেন, সেখান থেকে আপনারা দেখতে পাবেন, আমরা যে বার্তাটা নিয়ে যাব, রোহিঙ্গারা যে বার্তাটা পাঠাবেন, সেটা আগামী সেপ্টেম্বরে ইউএন কনফারেন্সের একটি বড় উপাদান। আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমরা এ সমস্যার আশু ও স্থায়ী সমাধান চাই। আপনি আন্তর্জাতিক সাহায্য দিয়ে কত দিন রাখবেন, তাদের তো বাড়িঘরে ফিরতে হবে। সেটাই আসল কথা।