বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখনো ‘কিছুটা উদ্বেগ’ থাকলেও তা কেটে যাবে চার-পাঁচ মাসে। পরিস্থিতি যাতে অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে দায়িত্ব নিতে হবে ভোটে অংশ নেওয়া দলগুলোকেও। নির্বাচন কমিশন বলেছে, ভোটের সময় অতিরিক্ত সেনাসদস্য মোতায়েনের অনুরোধ করবে সরকারকে। গতকাল বিকালে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ছাড়াও একজন নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান জানান, পুলিশের দুর্বলতার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও তা আগামী চার-পাঁচ মাসে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। নির্বাচনের সময় বেশিসংখ্যক সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা রাখবে নির্বাচন কমিশন। তাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আসন্ন নির্বাচনে প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনা করেছি। আচরণবিধি, সীমানা নির্ধারণ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকারের বিষয় রয়েছে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যতটুকু বুঝেছি তারা (ইসি) যথাযথভাবে নির্বাচনি প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের কিছুটা এখনো কনসার্ন আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে। তবে তারা মনে করেন এবং আমরাও মনে করি- দেশে এখন পুলিশের ভূমিকা অপেক্ষাকৃত দুর্বল। আগের সরকার পুলিশকে এমনভাবে ব্যবহার করেছে, তারা নিজেদের আচরণের জন্য লজ্জিত। সেজন্যই এই দুর্বলতা। এটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব আছে। আমাদেরও চেষ্টা থাকতে হবে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়।’
নজরুল ইসলাম খান জানান, আচরণবিধির বিষয়ে বিএনপি প্রস্তাবনা দিয়েছে। ইসির মতামতের সঙ্গে বিএনপির সুপারিশের তেমন তফাত নেই। তিনি জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের এনআইডি, ই-পাসপার্ট ও এমআরপি রয়েছে তাদের বিষয়ে কাজ করছে ইসি।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জানান, কমিশন জানিয়েছে ভৌগোলিক, প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভোটারসংখ্যার বিষয়টাও বিবেচনায় নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ইসি ৩০০ আসনের খসড়া প্রকাশ করেছে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অভিযোগ জানাতে পারলেও দলের আপত্তি জানানোর সুযোগ নেই। তারা যেভাবে করার সীমানা করেছেন। আপত্তি ওঠা আসনগুলোর ব্যাপারে আমাদের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ দায়ের করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে সীমানা নিয়ে শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সিইসি।
আরপিও-শঙ্কা ও আসন ভাগাভাগি : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধন প্রস্তাবে একক প্রার্থী হলে সংশ্লিষ্ট আসনে ‘না’ ভোটের বিধান রাখতে চায় নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এটা একটা নতুন প্রস্তাব। এটি আমাদের প্রস্তাব নয়। যারা প্রস্তাব করেছেন এ ব্যাপারে তাদের জিজ্ঞাসা করলে ভালো হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আরপিও বিষয়ে দলে আলোচনা করে মতামত দেব। ব্যক্তিগত মতামত দিতে পারব না।’
আসন ভাগাভাগির বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো আলোচনা এখনো হয় নাই। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছিলেন আমরা যারা যুগপৎ আন্দোলন করেছি, একসঙ্গে থাকব। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে একসঙ্গে সেই দায়িত্ব পালন করব।’