ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাই কোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার জজ আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক। অন্যদিকে নির্বাচনে প্রার্থিতা ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেছেন মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার। তিনি ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী হয়েছিলেন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় নাম ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। ডাকসু নির্বাচনের পাশাপাশি ডাকসু হল সংসদ নির্বাচনও স্থগিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) এ রিটের শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এদিকে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া, তদন্ত ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকাসংক্রান্ত হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। এর ফলে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন হতে আর কোনো বাধা থাকল না।
আপিল বিভাগের আদেশের পর শিশির মনির বলেন, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন হতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
এর আগে এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। একই দিন বিকালে এ বিষয়ে হাতে লেখা আবেদন নিয়ে চেম্বার জজের দ্বারস্থ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। পরে হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাবির সিভিল মিসলিনিয়াস পিটিশন (সিএমপি) (হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন) দাখিল করা পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন চেম্বার আদালত। এর ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার সিএমপি করেন ঢাবি উপাচার্য। এ আবেদন শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য গতকালের দিন নির্ধারণ করেন।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম এ রিট দায়ের করেন। রিটে অভিযোগ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন। এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেলে প্রার্থী হলেন, এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিট মামলায়।
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে আরেক রিট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্রার্থিতা ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেছেন মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার। তিনি ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী হয়েছিলেন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় নাম ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। ডাকসু নির্বাচনের পাশাপাশি ডাকসু হল সংসদ নির্বাচন স্থগিত নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
জুলিয়াস সিজার তালুকদারের নাম ও ব্যালট নম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, মর্মে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে রিটে। আজ এ রিট আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন জুলিয়াস সিজারের আইনজীবী রাশেদা চৌধুরী।