আপনি দিনে কতবার ক্লান্তি বোধ করেন? শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার পরও সিঁড়ি দিয়ে ওঠার পর হাঁপিয়ে যান? হতে পারে আপনার শরীরের আয়রনের অভাব রয়েছে। অনেকেই রয়েছেন যারা আয়রনকে পুষ্টি বলে মনে করেন না। কিন্তু আয়রন আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিনারেল।
আয়রন আমাদের সমগ্র শরীরে রক্ত পরিবহনে সহায়তা করে। এটি হিমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, লোহিত রক্ত কণিকার পদার্থ যা আপনার ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে আপনার সারা শরীরে এটি পরিবহন করে। হিমোগ্লোবিন শরীরের আয়রনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিনিধিত্ব করে।
যদি আপনার পর্যাপ্ত আয়রন না থাকে তবে আপনার শরীর পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর অক্সিজেন বহনকারী লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করতে পারে না। লোহিত রক্ত কণিকার অভাবকে আয়রনের অভাব অর্থাৎ রক্তাল্পতা বলা হয়। বর্তমানে ভারতের মত দেশে এই রক্তাল্পতা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ সমগ্র ভারতে ৫৩.২ শতাংশ মহিলা এবং ২১.৭ শতাংশ পুরুষ এই রক্তাল্পতার সমস্যায় ভুগছেন।
আয়রনের অভাবে শরীরের যে উপসর্গগুলি দেখা যায়-
ফ্যাকাশে বা হলুদ ত্বক, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, বুকে ব্যথা, ঠান্ডা পা এবং হাত, ভঙ্গুর, ফাটা নখ, নখের ক্ষয়, চুল পড়া, ত্বকের সমস্যা, ঘা এবং মুখে ঘা হওয়া।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের শরীরে কত পরিমাণ আয়রন প্রয়োজন-
যদিও এই আয়রনের প্রয়োজনীয়তা বয়সের ওপর নির্ভর করে, তবে শিশু এবং বাচ্চাদের প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে বেশি আয়রনের প্রয়োজন হয়। ৪ থেকে ৮ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতিদিন ১০ মিলিগ্রাম এবং ৯ থেকে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতিদিন ৮ মিলিগ্রাম আয়রনের প্রয়োজন হয় একটি বাচ্চার শরীরে।
অন্যদিকে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের আরও আয়রন প্রয়োজন, কারণ তাদের পিরিয়ডের সময় প্রতি মাসে রক্ত শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এই কারণেই ১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের প্রতিদিন ১৮ মিলিগ্রাম আয়রনের প্রয়োজন। অন্যদিকে একই বয়সের পুরুষদের দিনে মাত্র ৪ মিলিগ্রাম আয়রনই যথেষ্ট।
এই আয়রনের অভার আপনি খাদ্যের মাধ্যমে পূরণ করতে পারেন। এর জন্য আপনি কী খাবার খাবেন, দেখে নিন-
বিফ, লিভার, মুরগির মাংস, টার্কির মতো বিভিন্ন ধরণের মাংসে, ছোলা, ডাল, শুকনো মটরকড়াই, মটরশুটি, পালং শাক, সবুজ মটর, ব্রকলি, ব্রুসেল স্প্রাউটসের মাধ্যনে আপনি আয়রনের অভাব পূরণ করতে পারেন। এছাড়াও অন্যান্য খাদ্য দ্রব্য যেমন- ডিম, মাছ, শস্যের মাধ্যমে শরীরে আপনি আয়রনের অভাব পূরণ করতে পারেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত