হাঁপানি কী?
হাঁপানি হলো শ্বাসনালীর সংকোচন জনিত রোগ। এলার্জিজনিত যেকোনো উপাদানের সংস্পর্শে এলে শ্বাসনালীতে এক ধরনের প্রদাহ তৈরি হয়, যার ফলশ্রুতিতে শ্বাসনালী সংকুচিত হয়ে যায়। এই অবস্থাকে হাঁপানি বলে।
হাঁপানির কারণ সমূহ কী?
ধুলা, তীব্র ঠান্ডা পানি খাওয়া অথবা ব্যবহার করা, তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ যেমন মশার কয়েলের গন্ধ, বডি স্প্রে, এয়ার ফ্রেশনার, সিগারেটের ধোঁয়ার গন্ধ, বন্ধ রান্না ঘরের চুলার ধোয়া, এলার্জিজনিত খাবার যেমন ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, খাসির মাংস, বেগুন, বাদাম ইত্যাদি, বাসায় পাখি অথবা বিড়াল, ফুল গাছ, কার্পেট অথবা পাপোশ ব্যবহার হাঁপানির লক্ষণ প্রকাশের অন্যতম কারণ। এছাড়াও অতিরিক্ত শারীরিক অথবা মানসিক চাপের কারণেও হাঁপানির লক্ষণসমূহ বাড়তে পারে। কিছু ভাইরাস যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণে হাঁপানির লক্ষণ বেড়ে যায়।
হাঁপানির লক্ষণ সমূহ কী?
হাঁপানি রোগের মূলত চারটি লক্ষণ প্রকাশ পায় কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ এবং বুকে বাঁশির মতো শব্দ অনুভূত হওয়া।
করণীয় কী?
হাঁপানি রোগের যেকোনো একটি লক্ষণ প্রকাশ পেলে অবশ্যই ফুসফুস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং একইসাথে হাঁপানির লক্ষণগুলো বেড়ে যায়-এরূপ কারণসমূহ পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে হাঁপানি রোগের চিকিৎসা নিলে এ রোগটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। অন্যথায় রোগটি জটিল রূপ ধারণ করে, যা পরবর্তীতে চিকিৎসায় পুরোপুরি ভালো হয় না।
আমাদের কিছু ভ্রান্ত ধারণা
আমরা অনেকেই মনে করে থাকি হাঁপানি একটি ছোঁয়াচে রোগ। হাঁপানি মোটেও কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। সুতরাং হাঁপানি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি আমাদের মতই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।
আমাদের আরেকটি ভ্রান্ত ধারণা হলো হাঁপানি রোগ কখনো ভালো হয় না। হাঁপানি মূলত একটি এলার্জিজনিত রোগ। সুতরাং হাঁপানি রোগের লক্ষণগুলো বেড়ে যায় এরূপ এলার্জিজনিত কারণসমূহ পরিহার করলে এবং চিকিৎসা পদ্ধতি সঠিকভাবে অবলম্বন করলে হাঁপানি রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে।
সর্বোপরি হাঁপানি কোনো মরণঘাতি রোগ নয়। সুচিকিৎসা এবং নিয়ম মেনে চললে হাঁপানি রোগে আক্রান্ত রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।
লেখক : বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, আলোক হাসপাতাল, মিরপুর-৬। হটলাইন : ১০৬৭২
বিডি প্রতিদিন/এমআই