শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বুক ধড়ফড় মানেই হার্টের অসুখ নয়

বুক ধড়ফড় মানেই হার্টের অসুখ নয়

বুক ধড়ফড় নিয়ে আমাদের সবারই আতঙ্ক থাকে এই বুঝি হার্টের সমস্যা হলো। আমার মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে। আসলে পালপিটেশন বা বুক ধড়ফড় হওয়া মানেই হার্টের অসুখ নয়। মামুনের বয়স ২৫ বছর। হঠাৎ তার বুক ধড়ফড় করা শুরু হয়। নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয় তখন। এর সঙ্গে যোগ হয় হাত-পা অবশ হয়ে আসা, বুকে ব্যথা করা। ক্রমশ তার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছিল। মনে হয় এখনই মরে যাবে। এ ধরনের রোগী একটার পর একটা ইসিজি আর ইকোকার্ডিওগ্রাম করতে করতে তার চিকিৎসা ফাইল অনেক বড় করে ফেলেন। আসলে এটি একটি টেনশন বা অস্থিরতা গ্রুপের রোগ যাকে আমরা প্যানিক ডিজঅর্ডার বলি।

রোগীদের ভাবনা : ১. তার হার্টের অসুখ এ জন্য বারবার ইসিজি ও ইকোকার্ডিওগ্রাম করে বেড়াচ্ছে। ২. মাথা ঝিমঝিম করছে, মানে স্ট্রোক করে ফেলবে। ৩. হাত-পা অবশ হয়ে মনে হয় প্যারালাইসিস। ৪. যে কোনো সময় মৃত্যু হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন রোগটি : ১. হঠাৎ করে বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা।

২. দম বন্ধ হয়ে আসা, বড় বড় করে হাঁপানি রোগীর মতো শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া। ৩. হাত-পা অবশ হয়ে আসা। শরীরের কাঁপুনি হওয়া। ৪. বুকের মধ্যে চাপ লাগা এবং ব্যথা অনুভব করা। ৫. এমনও দেখা গেছে, কোনো কোনো রোগী বলে হঠাৎ পেটের মধ্যে একটা মোচড় দেয় তারপর ওপর দিকে উঠে বুক ধড়ফড় শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা অবশ হয়ে যায়। আর কথা বলতে পারে না। ৬. বমি বমি ভাব লাগে। পেটের মধ্যে অস্বস্তিবোধ লাগা ও গলা শুকিয়ে আসা। ৭. পেটের মধ্যে গ্যাস ওঠে, খালি গ্যাস উঠে এবং বুকে চাপ দেয়। ৮. দুশ্চিন্তা থেকেও মাথাব্যথা হতে পারে। কোনো কোনো রোগী বুকে ব্যথা ও হাত-পায়ের ঝিমঝিমকে হার্ট  অ্যাটাকের লক্ষণ মনে করে প্রায়ই ছুটে যান হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ডাক্তার দেখাতে। ৯. মৃত্যুভয় দেখা দেওয়া মনে হয় যেন এখনই মরে যাবেন রোগ যন্ত্রণায়। ১০. নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা। ১১. বারবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া/ইসিজি করা।  ১২. দূরে কোথাও গেলে স্বজনদের কাউকে সঙ্গে নিয়ে যায় যেন মাঝখানে অসুস্থ হলে ধরতে পারে।  ১৩. রোগীদের মধ্যে ভয় কাজ করে এই বুঝি আবার একটি অ্যাটাক হতে পারে।  ১৫. রোগের লক্ষণগুলো হঠাৎ করেই শুরু হয়।

ডা. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, সহকারী অধ্যাপক

আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতাল, ধানমণ্ডি, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর