শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঠোঁটের যত অসুখ-বিসুখ

ডা. মিজানুর রহমান

ঠোঁটের যত অসুখ-বিসুখ

মুখমণ্ডলের শ্রীবৃদ্ধিতে ঠোঁটের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। কবি-সাহিত্যিকদের রচিত কবিতা, সংলাপ, উক্তিতে ওষ্ঠ শব্দটি গুরুত্বসহকারে ব্যবহূত হয়েছে। সেদিক থেকে সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ উপাদান হলো ঠোঁট বা ওষ্ঠ। এর সৌন্দর্য ধরে না রাখলে সবকিছুই শ্রীহীন। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় ঠোঁটের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য।

ঠোঁট ফাটা : ঠোঁটের ওপরের যে আবরণ তা কিন্তু বেশ পাতলা এবং সংবেদনশীল। তাই সহজেই আবহাওয়ার প্রভাব এতে ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে গেলে (বা বাতাসের শুষ্কতা বেড়ে গেলে) যেমন শীতকালে ঠোঁটকে ভেজা রাখা পানি দ্রুত শুকিয়ে যায়। অত্যধিক শুষ্কতার জন্য ঠোঁট চটচট করে এবং ফেটে যায়। তখন খেতে গেলে ঝাল ধরে এবং কথা বলতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় ফাটা স্থান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে এবং প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এতে ঠোঁটের শ্রী তো নষ্ট হয়ই, তাছাড়া মানসিক দিক থেকে এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। এ সমস্যা প্রতিরোধে শীতের প্রথম থেকেই ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ঠোঁটে লাগাতে হবে। রাতে ঘুমানোর সময় লাগানো উচিত। তবে অনেকের ঠোঁট বেশি শুষ্ক হয়, অনেকের হয় না। শীতকাল ছাড়াও পরিবেশ রুক্ষ পরিলক্ষিত হলেও (যাদের ঠোঁট বেশি ফাটে) সেগুলো লাগানো উচিত।

প্রসাধন ব্যবহারে অসতর্কতা : সাজতে মানা, তা কিন্তু নয়। তবে লিপস্টিক, লিপলাইনার ইত্যাদি ব্যবহারের ব্যাপারে গুণগত মান একটা চিন্তার বিষয় এবং এসব ব্যবহারে কোনো অ্যালার্জি দেখা গেলে তা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। অনেক সময় উল্টাপাল্টা প্রসাধনী ব্যবহারে ঠোঁটে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে। তাই প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুণগতমান সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং কোনো প্রসাধনী ব্যবহারে যদি অ্যালার্জি হয় তবে ব্যবহার বন্ধ করে চিকিৎসকের

পরামর্শ নিতে হবে।

জীবাণুর আক্রমণ : হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস দ্বারা ঠোঁটে ঘা হতে পারে। যাকে বলা হয় জ্বরঠুঁটো। এটার আক্রমণে ঠোঁটে ব্যথা হয় সৌন্দর্য নষ্ট হয়। অনেক সময় ক্যানডিডা নামক ছত্রাকের আক্রমণে ঠোঁটে সমস্যা হয়। দুই ঠোঁটের কোণে অনেক সময় সাদা ঘা হয় যা ভিটামিন বি-২-এর অভাবে হয়। এক্ষেত্রে ভিটামিনসমৃদ্ধ অনেক খাবার যেমন শাক-সবজি, ফলমূল খেতে হবে।  তাছাড়া ইনফেকশন যাই হোক না কেন, ঠোঁটের বিভিন্ন অস্বাভাবিক পরিবর্তন যেমন—

ফোলা, চুলকানো, জ্বালাপোড়া জাতীয় সমস্যা

হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লেখক : আবাসিক সার্জন, ঢাকা ন্যাশনাল

মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর