আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, অাসাম এবং পন্ডিচেরিতে বিধানসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই এবার মন্ত্রীদের 'আমলনামা' (পারফরমেন্স) খতিয়ে দেখতে তাদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে সংসদের অ্যানেক্স বিল্ডিংএ হবে এই বৈঠক। সেখানেই মন্ত্রীদের কাজের 'মার্কশিট' পেশ করবেন মোদি।
সূত্রে খবর, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কাজের খতিয়ান পেশ করবেন তার অন্য মন্ত্রীরা। ক্ষমতায় আসার পর মোদি যে প্রকল্পগুলি ঘোষণা দিয়েছিলেন, গত দেড় বছরে তার কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে তারই খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে দেখবেন মোদি। যদিও সূত্রে খবর সেই প্রকল্পগুলির অনেকটাই বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে আশানুরূপ কর্মসংস্থানও হয়নি। আর তার ফলে বছরে এক কোটি কর্মসংস্থানের যে প্রতিশ্রুতি ছিল তার ধারেকাছেও যাচ্ছে না মোদি সরকারের প্রকৃত পরিস্থিতি। স্বাভাবিকভাবেই বেশকিছু মন্ত্রণালয়ের পারফরমেন্সে আদৌ খুশি নন প্রধানমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর মন্ত্রিসভায় বড়সড় রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে বলে খবর।
সেই কারণে সরকারের কাজে আরও গতি আনতে আসন্ন বাজের অধিবেশনের আগেই প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার রদবদল করতে পারেন বলে জল্পনা। সেক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা থেকে কয়েকজনকে সরিয়ে দলের সংগঠনের কাজে লাগানো হতে পারে আবার সংগঠেনের থেকে কিছু নতুন মুখকে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পরে। স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা শুরু হয়েছে কোন মন্ত্রীদের ওপর কোপ পড়তে চলেছে। তবে এই রদবদল আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে হবে না পরে পরে হবে তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। যদিও মন্ত্রিসভায় রদবদলের ব্যাপারে কেউই মুখ খুলতে চাননি।
এদিকে, দলের সাংগঠনিক পদেও বেশ কিছু রদবদল হতে পারে খবর। দ্বিতীয়বারের জন্য বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরই অমিত শাহ এই পরিবর্তন আনতে পারে বলে খবর। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই অমিত শাহের নেতৃত্বেই উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে ৭১টি আসনে জয় পেয়েছিল এই গেরুয়া দলটি। এরপর দলের সভাপতি পদে থাকাকালীন মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড, জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। কিন্তু দিল্লি এবং বিহারের মতো রাজ্যে বিরোধীদের কাছে বিপর্যস্ত হওয়ার পরই দলের তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। লালকৃষ্ণ আদভাণী, মুরলী মনোহর যোশি, যশবন্ত সিনহার মতো দলের প্রবীণ নেতারা প্রকাশ্যেই তার বিরোধীতা করেন। এমন এক পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন, যেখানে বিজেপির অবস্থান মোটেই ভাল নয়। তাই এই নির্বাচনে বিজেপির অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে পুরো শক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। ওই রাজ্যগুলিতে কোন আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করা যায় কি না তা নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে দলের সাংগঠনিক পরিবর্তন আনাটা জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৭ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা