ভারতের ১৪ তম রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন শেষ। সোমবার সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পযন্ত চলে ভোটগ্রহণ পর্ব। ভারতের দুইটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল সহ ৩২ টি রাজ্যের বিধানসভা ও দিল্লির সংসদ ভবনের ৬২ নম্বর হলে ভোট নেওয়া হয়। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ছিল কড়া নিরাপত্তা।
এবারে রাষ্ট্রপতি পদে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবিরের প্রার্থী ছিলেন রামনাথ কোবিন্দ অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মীরা কুমার। এরা দুইজনই দলিত সম্প্রদায়ের। দেশটির রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন-১৯৫২ অনুসারে এই ভোটে প্রতিটি রাজ্যের নির্বাচিত বিধায়ক ও সংসদের দুই কক্ষের নির্বাচিত সদস্যরাই অংশ নিয়েছিলেন। তবে মনোনীত সাংসদ (শচীন তেন্ডুলকর সহ ১২ জন) বা রাজ্যগুলির বিধানসভায় মনোনীত বিধায়কদের ভোটাধিকার ছিল না।
এদিন সংসদ ভবনে ভোট দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, সংসদীয় মন্ত্রী অনন্তকুমার, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, বিজেপির জেষ্ঠ্য নেতা লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলী মনোহর যোশী। ভোট দেন কংগ্রেস সাংসদ ও দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, সাংসদ রাহুল গান্ধী, জয়রাম রমেশ, ন্যাশনাল কনফারেন্স সাংসদ ফারুক আবদুল্লা প্রমুখ। দুপুরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ভোট দেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সহ বিধায়ক ও সাংসদরা। দিল্লি বিধানসভায় ভোট দেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এছাড়াও নিজেদের রাজ্যের বিধানসভায় ভোট দেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্য বিধায়কও সাংসদরা।
এদিন ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে মমতা বলেন ‘হারবো জেনেও মীরা কুমারকে সমর্থনের মধ্যে দিয়েই আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি। এই বুকের পাটা আমরা ছাড়া অন্য কারও নেই’। তবে নতুন রাষ্ট্রপতি হিসাবে রামনাথ কোবিন্দের প্রতি তৃণমূলের শ্রদ্ধা থাকবে বলেও জানান মমতা। তিনি বলেন ‘অন্য যিনি প্রার্থী আছেন তিনি হয়তো বিরোধী ভোটে জিতবেন। তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা থাকবে। যেহেতু তিনি রাষ্ট্রপতি হবেন’।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দেশটির মোট ৪১২০ জন বিধায়ক এবং ৭৭৬ জন(লোকসভা-৫৪৩, রাজ্যসভা-২৩৩) সাংসদ মিলিয়ে ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোট সংখ্যা হল ১০,৯৮,৮৮২। বিধায়ক ও সংসদ সদস্যের মোট ভোটমূল্যের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৪২ টি ভোট পেলেই রাইসিনা হিলসে প্রবেশাধিকার মিলবে। এই নির্বাচনে কোন প্রতীক চিহ্ন ছিল না। নির্বাচনের ব্যালটে এক নম্বরে নাম ছিল মীরা কুমারের। ২ নম্বরে নাম ছিল রয়েছে রামনাথ কোবিন্দের। সাংসদদের ব্যালটের রং ছিল সবুজ আর বিধায়কদের ব্যলটের রং ছিল গোলাপি। নিজেদের কলমের বদলে এবার কমিশনের তরফে দেওয়া বেগুনি রঙের বিশেষ এক কালি দিয়ে ভোট দেন সাংসদ ও বিধায়করা। সাংসদের ব্যালট পেপার হিন্দিু ও ইংরেজি ভাষায় লেখা এবং বিধায়কদের জন্য ইংরেজি ও সেই রাজ্যের আঞ্চলিক ভাষা।
ভোটগ্রহণের পরই কড়া পাহাড়ায় ব্যালট বাক্সগুলিকে দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সংসদের ৬২ নম্বর ঘরে তালা বন্দী রাখা হবে। আগামী ২০ জুলাই ভোটগণনার দিকে খোলা হবে ব্যালট বাক্সগুলিকে। ২৫ জুলাই শপথ নেবেন নতুন রাষ্ট্রপতি।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন