সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা ও গবাদি পশু পাচারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএসএফ ডিজি কে. কে. শর্মা। গতকাল শুক্রবার ভারতের মেঘালয়ে সীমান্ত পরিদর্শনের পর শিলং-এ গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিএসএফ প্রধান এ মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি জানান, বাহিনীর কৌশলগত মোতায়ন, নন-লিথাল ওয়েপনস’এর ব্যবহার এবং রাজ্য পুলিশের সাথে বিএসএফ-এর সুন্দর সমন্বয় সাধনের ফলে গত তিন বছরে বাংলাদেশে গবাদি পশু পাচারের সামগ্রিক সংখ্যা নিচে নেমে এসেছে।
এক পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে ৪০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত বিস্তৃত রয়েছে। ২০১৬ সালে এই সীমান্ত বরাবর পাচারের সময় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬৯ গবাদি পশু আটক করা হয়েছে। ২০১৭ সালে আটক করা হয় ১ লাখ ১১ হাজার ৬১৫ এবং চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা ১৬ হাজার ৮৪৭’।
যদিও গবাদি পশু পাচার একশত ভাগ কমানো সম্ভব নয় বলেই মনে করেন বিএসএফ ডিজি, তার কারণ দীর্ঘ বছর ধরে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষেরা এই পেশার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু তার পরেও এই অবৈধ বাণিজ্য কমানোর চেষ্টার ত্রুটি রাখা হচ্ছে না।
সীমান্তে মানুষ হত্যার প্রসঙ্গ তুলে শর্মা বলেন ‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ইনসাস রাইফেলস-এর পরিবর্তে আমাদের জওয়ানরা পাম্প অ্যাকশন গান ব্যাবহার করছে। এর ফলে সীমান্তে মানুষ হত্যা অনেক কমেছে। সীমান্তে যখনই বাংলাদেশি নাগরিকের হত্যার ঘটনা ঘটে তখনই সেদেশের সরকার ভয়ানক চাপে পড়ে। সেই কারণেই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাহিনীকে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা কমানোর কথা বলা হয়েছে। আগে মানুষ হত্যার সংখ্যাটা তিন অঙ্কের হতো, এখন মৃত্যু দুই সংখ্যায় নেমে এসেছে। গত বছরে মাত্র ১০ জনের মৃত্যু হয়’।
তবে সীমান্তে নন-লিথাল অস্ত্র ব্যবহারে গবাদি পশু পাচারকারী কিছুটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অভিমত বিএসএফ ডিজি’র। তিনি বলেন ‘বাহিনীর এই কৌশলগত পরিবর্তনের ফলে পাচারকারীরা অনেক সাহসী হয়ে উঠেছে। বিএসএফ জওয়ানদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে এবং প্রতিবছর আনুমানিক দেড় শতাধিক জওয়ান ও কর্মকর্তা আহত হচ্ছেন। গত বছরে বাংলাদেশি পাচারকারীদের সাথে সংঘর্ষে বিএসএফ’এর এক কর্মকর্তা ও এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন’।
বিডি প্রতিদিন/১৪ জুলাই ২০১৮/হিমেল