নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সরকার না চাইলে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে না। তবে আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।’
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর এফডিসিতে ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই প্রধান’ শীর্ষক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি, এবং সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নিবার্চন অনুষ্ঠানের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে সময়ের মধ্যে নির্বাচন হওয়া জরুরি। এবারের নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকবে। সব পক্ষ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে ভোটাররা এবার নিঃসংকোচে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো হুন্ডা—গুন্ডা, টাকার খেলায় মত্ত থাকলে ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা মুখ্য হলেও প্রার্থী, ভোটার, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমসহ সব অংশীজনের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সংস্কার ব্যতিত নির্বাচন হলে সে নির্বাচন বিতর্কিত হতে পারে। লেজুরভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি গ্রহণযোগ্য নয়। ছাত্ররা কোনো দলের লাঠিয়াল হবে এটা হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে। সংসদ নির্বাচনে পিআর ও আসনভিত্তিক উভয় পদ্ধতিরই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বর্তমান পদ্ধতিতে আসন ভিত্তিক নির্বাচনের মাধ্যমে নিম্নকক্ষ গঠন এবং আনুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণে স্বৈরাচারবিরোধী দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ির অপসংস্কৃতি বন্ধ করা উচিত। পাল্টাপাল্টি দোষারোপের রাজনীতি বর্জন করে নেতাদের বক্তব্যে শালীনতা বজায় রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে কোন বিভেদ তৈরি করা যাবে না। আগামী নির্বাচন আয়োজন নিয়ে এই বিভেদ ও মতবিরোধ বাড়তে থাকলে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার আশঙ্কা তৈরি হবে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী দলগুলোর মধ্যে বিভেদের সুযোগ নিয়ে পরাজিত শক্তি দেশে অরাজকতা তৈরি করতে পারে। তবে কেউ কেউ দেশে ১/১১ ও গৃহযুদ্ধের যে জুজুর ভয় দেখাচ্ছে তা অমূলক। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও ফ্যাসিবাদ ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দল ও শক্তি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এই ছায়া সংসদ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি)-এর বিতার্কিকরা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়।
বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, জাকির হোসেন লিটন ও মো. হুমায়ুন কবীর।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ