জার্মানিতে ফিরল হিটলার আর স্বস্তিকার আতঙ্ক। ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সালের নাজি যুগের ইতিহাস নিয়ে এসেছে ভিডিও গেম। অভিযোগ উঠেছে, এটা শিল্পের স্বাধীনতা, নাকি নতুন করে জঙ্গিবাদের উত্থান।
ইউরোপের বৃহত্তম গেমসের কোম্পানি গেমসক্সমএই সপ্তাহে বের করেছে থ্রু দ্য ডার্কেস্ট টাইমস নামের এই গেমটি। সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রেড অর্কেস্ট্রা নেটওয়ার্কসের সদস্য হয়ে খেলতে হবে। আগের গেমের কালো স্বস্তিকার জায়গায় এবার ত্রিভুজের মতো কিছু প্রতীক। স্বস্তিকা জার্মানিতে অসাংবিধানিক।
গত বছরের জনপ্রিয় ভলফেনস্টেইন২-এর নতুন নাম হয়েছে হিটলার, তার বিখ্যাত গোঁফসহ। নতুন নিয়মে ভার্চুয়াল নাজিরা তাদের আর্মব্যান্ডে পরে আছে তাদের নাজি প্রতীক। তবে গেমসের উদ্ভাবক জোর্জ ফ্রিডরিশ জানিয়েছেন, হিটলারের নাম লফেনস্টেইন২-এ হেইলার। তার কোনও গোঁফ নেই। আর নেই ইহুদিদের অস্তিত্ব। সেটাতে গোটা ইতিহাসই লুকিয়ে ফেলা হয়েছে।
ভিডিও গেমস প্রস্তুতকারীরা নিয়ন্ত্রকদের বোঝাতে পেরেছেন, সিনেমা-থিয়েটারের মতো গেমসেও স্বাধীনতা দেওয়া হোক। এই প্রথম সত্যিকারের ইতিহাসের সঙ্গে খেলা হবে। ১৯৯৮ সালে আদালতের আদেশে বন্ধ হয়ে যায় ভিডিও গেমসে নাজি প্রতীকের ব্যবহার। যুক্তি ছিল, বাচ্চারা ওইসব দেখে তাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
পাল্টা যুক্তি ছিল, অতীতকে যে সব সময় লুকাতে হবে তা নয়, সেটা একটা সতর্কতা হিসেবেও দেখা যেতে পারে। আরেক মত হলো, স্বস্তিকা নিষিদ্ধই থাক। নইলে বাস্তবে এর প্রতিক্রিয়া হতে পারে মারাত্মক। পাল্টা যুক্তি হল, স্বস্তিকা দেখেই কেউ নাজি হয় না। ভিডিও গেমসের খেলোয়াড়রা যথেষ্ট বুদ্ধিমান। তারা গল্প আর বাস্তবের ফারাক করতে জানে।
নিয়ন্ত্রকরা মুঠো খানিকটা আলগা করতেই জার্মানিতে হিটলারকে নিয়ে ফিল্মের ছড়াছড়ি। মাই ফুয়েরার: দ্য রিয়েলি ট্রুয়েস্ট ট্রুথ অ্যাবাউট অ্যাডলফ হিটলার, হেইল: এ নিও নাজি ফার্স এবং লুক হু ইজ ব্যাক ছবিগুলো রমরমিয়ে চলেছে। দু'বছর আগে প্রচুর ঐতিহাসিক টিকাসহ পুনর্মুদ্রিত হয়েছে হিটলারের মেইন ক্যাম্ফ। সেইসঙ্গেই উদ্বেগ বাড়ছে দক্ষিণপন্থী উগ্রবাদীদের নিয়ে।
বিডি প্রতিদিন/২৪ আগস্ট ২০১৮/আরাফাত