ভারতের দিল্লির ‘নির্ভয়া’ গণধর্ষণ কাণ্ডের জেরে এবার দেশটিতে আইনের পরিবর্তন হলো। ধর্ষণের মামলায় ১৬ বছর বয়স হলেই সাবালক হিসেবে ধরা হবে অপরাধীকে। সেই আইনেই কিশোরীকে গণধর্ষণের দায়ে পশ্চিমবঙ্গের এক কিশোরকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা হলো। মূল অভিযুক্তের সঙ্গে ওই নাবালকেরও যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল ভারতের শিয়ালদহ আদালত।
জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত আট মাস আগে। উল্টোডাঙার বাসন্তী কলোনির এক কিশোরীকে পাড়ারই দাদা সুজয় সর্দার বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার টোপ দেয়। ছোটবেলা থেকেই চেনা সুজয়ের কথায় সন্দেহ হয়নি কিশোরীর। কিশোরী রাজি হওয়ায় সল্টলেকে তাকে বেড়াতে নিয়ে যায় সুজয় ও তার এক সঙ্গী কিশোর। এরপর সল্টলেকের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে সুজয় সর্দার ও ওই কিশোর। নির্যাতিতা যাতে বাড়িতে না জানায় তার জন্য ভয়ও দেখায় দু'জন। কিশোরীও তাতে ভয় পেয়ে প্রথমে বাড়িতে কিছু বলেনি।
কিন্তু কিশোরীর আচরণ দেখে সন্দেহ হয় বাড়ির লোকজনের। চোখে-মুখে কান্নার ছাপ। তলপেটে ব্যথা এবং যৌনাঙ্গ থেকে রক্তপাত শুরু হয়। অবশেষে অভিভাবকদের জিজ্ঞাসাবাদে কান্নায় ভেঙে পড়ে পুরো ঘটনার কথা জানায় সে। কিশোরীর মা উল্টোডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে অভিযুক্ত দুজনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ পকসো আইনে শুরু হয় মামলা। শুক্রবার সেই মামলার রায়ে দু'জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। সেই সঙ্গে তিন লাখ টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর অভিযুক্ত কিশোরের পক্ষের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, তার মক্কেল যেহেতু নাবালক, তাই শাস্তির মাত্রা যেন কম হয়। কিন্তু বিচারক মানেননি।
বিচারকের পর্যবেক্ষণ, গণধর্ষণের মতো মামলায় দোষী হলে নাবালকত্ব যে কোন রক্ষাকবচ নয়, সে বিষয়ে লোকসভায় একটি বিল পাস হয়েছে সম্প্রতি। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিচারক কোন ছাড় দেননি ওই কিশোরকে। মূল অভিযুক্ত সাবালকের সঙ্গে তারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাই দেন বিচারক। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার