৭০ বছরের হাতিকে দিয়েই জোর করে প্যারেড করানো হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। বয়সের ভারে এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমে তখনই নেতিয়ে গিয়েছিল কঙ্কালসার তিকিরি নামের ওই হাতিটি। শুরু হয়েছিল অসুস্থ তিকিরির চিকিৎসা। তবে মন শক্ত করে নিয়েছিলেন বন্যপ্রাণপ্রেমীরা। পশুপাখি বিশেষজ্ঞরা ধরেও নিয়েছিলেন যে আর বেশিদিন আয়ু নেই তিকিরির। অবশেষে মারাই গেল হাতিটি।
বিবিসি’র রিপোর্ট বলছে, বয়সের ভারে কাহিল হয়ে যাওয়া ৬০টি হাতির মধ্যে তিকিরি ছিল একজন। এদের সকলকেই শ্রীলঙ্কার পেরাহেরা উৎসবে জোর করে প্যারেড করানো হত। শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে টুথের মন্দিরে (টেম্পল অফ টুথ) আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠান। জীর্ণ হাতিদের গায়ে চাপিয়ে দেওয়া হত ভারী জোব্বা জাতীয় জমকালো পোশাক। এর ফলে আরও কষ্ট হত তিকিরি এবং তার অন্যান্য সঙ্গীদের।
‘সেভ এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা লেক চেলার্ট মঙ্গলবার ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন তিকিরির মৃত্যুর খবর। তিনি লিখেছেন, তিকিরির সমস্ত যন্ত্রণা এবার শেষ হয়েছে। ওর আত্মা এবার মুক্ত। আর কোনও কষ্ট ওকে ছুঁতে পারবে না। শান্তিতে থেকো তিকিরি। আর কোনওদিন এই পৃথিবীর দিকে ফিরে তাকিও না, যে পৃথিবীর তোমার এবং তোমার বন্ধুদের প্রতি চরম অত্যাচার করেছে।
আগস্ট মাসে শীর্ণকায় তিকিরির ছবি প্রকাশ্যে এনেছিল ‘সেভ এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশন’। সেখানেই দেখা গিয়েছিল গায়ে জবরজং ভারী পোশাক পরানো অবস্থায় তিকিরিকে অংশ নিতে হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মের ঐতিহ্যপূর্ণ এসালা পেরাহারা মিছিলে। এরপরেই ধকল সইতে না পেরে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে বৃদ্ধ হাতিটি। জানা যায়, “digestive ailment” নামে এক রোগের শিকার হয়েছে সে। যার ফলে হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও কিছুতেই ওজন বাড়ছিল না তিকিরির।
প্রসঙ্গত, ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বৃদ্ধ হাতিকে কীভাবে জোর করে প্যারেডে অংশ নেওয়ানো হল, তা জানতে শুরু হয় তদন্ত। নড়েচড়ে বসেন শ্রীলঙ্কার পর্যটন ও বনমন্ত্রী জন অমরতুঙ্গা। তিনি বলেন, আমি বন দফতরকে নির্দেশ দিয়েছি, এত অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্যারেডে নিয়ে যাওয়ার পেছনে কারা দায়ী তা খতিয়ে দেখার জন্য। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। সূত্র : দ্য ওয়াল।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক