কাশ্মীর নিয়ে সেই মধ্যস্থতার প্রস্তাবই টিকিয়ে রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক সারার পরে সেই বোঝাপড়ার বুলিই শোনা গিয়েছিল ট্রাম্পের মুখে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকের পরে, ট্রাম্প ফের বলেন, ভারত ও পাকিস্তান দুই প্রতিবেশী দেশই পরমাণু শক্তিধর। কাজেই নিজেদের মধ্যে ব্যাপারটা মিটমাট করে নেওয়াই মঙ্গলের।
রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় হিউস্টনে হাউডি মঞ্চে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, কিংবা যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-র হাত ধরে গোটা স্টেডিয়াম চক্কর কাটছিলেন, মনে হয়েছিল- এ তো নয়াদিল্লির পরমবন্ধু। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যেতে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। সোমবার সন্ধ্যায় ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকের পরে সম্পূর্ণ উল্টো সুরে গেয়ে ট্রাম্প বলেন, যদি পাক প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজি থাকেন তা হলে কাশ্মীর নিয়ে তিনি মধ্যস্ততা করতেই পারেন। এমনকী পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রস্তাবও রাখেন। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ট্রাম্প ফের বলেন, “দুই রাষ্ট্রনেতার সঙ্গেই খুব ভালো আলোচনা হয়েছে আমার। দুই দেশের প্রতিই আমার শ্রদ্ধা রয়েছে।” সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, “দুই দেশের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, কাশ্মীর নিয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমি মধ্যস্থতা করার কথাও বলেছি। আমার মনে হয় এই ব্যাপারটা খুবই স্পর্শকাতর। বোঝাপড়ার মাধ্যমে একটা সমাধান বার হতে পারে।”
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দেওয়ার পাশাপাশি নিউইয়র্কে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ট্রাম্প। তা নিয়ে হোয়াইট হাউসের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে মোদীকে উৎসাহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেই সঙ্গে কাশ্মীরবাসীকে যে উন্নততর জীবনযাত্রার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা-ও পূরণ করতে বলছেন তিনি। বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকের পরে স্বভালসুলভ প্রত্যয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীই আমার খুব ভালো বন্ধু। দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর। কাজেই দু’তরফে এটা মিটিয়ে নেওয়াই সকলের পক্ষে মঙ্গলজনক।”
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এর আগেও কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্ততার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু নয়াদিল্লি এক কথায় সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। সাউথ ব্লক স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কারও নাক গলানোর অধিকার নেই। কিন্তু তার পরেও ট্রাম্প যে ভাবে লাগাতার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন, তাতে মোদী প্রশাসনের একটু অস্বস্তি যে হচ্ছে সংশয় নেই। সূত্র : পার্সটুডে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক