গত মাসে তিব্বতের রাজধানী লাসা থেকে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তবর্তী নিনচি পর্যন্ত বুলেট ট্রেন চালু হয়েছে। চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, এই রেলপথকে পুরোদস্তুর সেনা পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হবে। এর ফলে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) সীমান্তবর্তী ওই প্রত্যন্ত অঞ্চলে খুব সহজে পৌঁছে যেতে পারবে।
ইতোমধ্যেই ওই অঞ্চলে এক দফা সেনা পরিবহন সম্পন্নও হয়েছে বুলেট ট্রেনের মাধ্যমে। পিএলএ-র ওয়েবসাইটের বক্তব্য তুলে ধরে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, ৪,৫০০ মিটার উঁচু ওই অঞ্চলে বুলেট ট্রেনের মাধ্যমে প্রায় অর্ধেক সময়ে (সাড়ে তিন ঘণ্টা) গন্তব্যে পৌঁছবে চীনা সেনারা।
এই প্রথম লাসা-নিনচি রেলপথকে সেনা পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেনা সূত্রে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে সেনা পরিবহনের ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হল চীনের পক্ষে।
গত ২৫ জুন লাসা-নিনচি রেলপথে (৪৩৫ কিলোমিটার) বুলেট ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে ১ জুলাই।
চীনের এক সামরিক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, সড়ক যোগাযোগ তুলনামূলক শ্লথ। অন্যদিকে, হেলিকপ্টারের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেনা পরিবহনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কম সময়ে বিপুল পরিমাণ সেনাকে পৌঁছে দিতে রেলপথের জু্ড়ি মেলা ভার। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নানা যন্ত্রপাতি, অস্ত্র এবং অন্য সামগ্রীও খুব সহজেই সীমান্তে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। কিংহাই-তিব্বত রেলপথের পরে তিব্বতে রেল যোগাযোগের দ্বিতীয় শাখা হিসেবে তৈরি করা হয়েছে সিচুয়ান-তিব্বত রেলপথ। এই রেলপথেরই অন্তর্গত লাসা-নিনচি। দ্রুত এই রেল যোগাযোগ গড়ে তুলতে সক্রিয় ছিলেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
গেল বছরের জুনে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনাদের সংঘর্ষের পর থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দু’দেশের সেনার তরফে একের পর এক বৈঠক করা হয়েছে। সম্প্রতি উভয় দেশের কমান্ডার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে ১২তম বৈঠক হয়েছে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের উপরে চাপ বাড়াতেই এই কৌশল নিয়েছে চীন।
সূত্র: আনন্দবাজার ও হিন্দুস্তান টাইমস।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন