পারিবারিক বিবাদের জেরে আড়াই বছর আগে মাকে খুন করেছে ছোট ছেলে। পরে দেহ পুঁতে রাখা হয় বাড়িতেই ঘরের মেঝেতে। মঙ্গলবার ছোট ছেলের স্ত্রীর কথায় ফাঁস হয়ে গেল সেই খুনের কথা। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বর্ধমানের হাঁটুদেওয়ান পীরতলা ক্যানেলপার এলাকায়।
এ ঘটনায় নিহত সুকুরানা বিবির ছোট ছেলে শেখ শহিদুল ওরফে নয়নকে আটক করা হয়েছে। বুধবার আদালতের নির্দেশ নিয়ে দেহ উদ্ধার করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, বছর আড়াই আগে ২০১৯ সাল নাগাদ হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান ক্যানেলপাড় এলাকার বাসিন্দা সুকুরানা বিবি। তিনি থাকতেন তার ছোট ছেলে নয়নের সঙ্গে। বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরেও মায়ের হদিশ না পেয়ে বর্ধমান থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন সুকুরানার বড় ছেলে শেখ কিসমত। একপর্যায়ে ধামাচাপা পড়ে যায় বিষয়টি।
এদিকে বছর দুয়েক আগে নয়নের বিয়ে হয় পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের এরুয়ার গ্রামে। কিন্তু মাস চারেক আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে নয়নের স্ত্রী সুকুরানা বাপের বাড়ি চলে যান তার সাত মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে। সোমবার কিসমত এবং তার স্ত্রী মিলি বিবি ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি এরুয়ার গ্রামে যান ছোট বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু সুকুরানা বাড়ি ফিরতে অস্বীকার করেন।
কিসমতের দাবি, ‘ছোট বউমার কাছে জানতে পারি তাদের পারিবারিক অশান্তির কথা। মাকে খুনের কথা সুকুরানার কাছে স্বীকার করে ভাই। নয়ন তার স্ত্রীকে বলেছে, মাকে ভারী বস্তু দিয়ে মাথার পেছনে মেরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ভাই তার স্ত্রীকেও খুন করে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। মাকে খুন করার মাস ছয়েক পর ওর বিয়ে হয়েছিল। মা বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে যাতায়াত করত। তাই নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে অশান্তি হয়েছে বহু বার। সে কারণেই রাগে খুন করেছে বলে মনে হয়। আমরা চাই ওর শাস্তি হোক।’
তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নয়ন পেশায় গাড়িচালক। সে মাঝেমাঝে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলত। মাকে খুনের পর গর্ত খুঁড়ে দেহ পুঁতে দিয়েছিল নয়ন। তার পর পাকা মেঝেও তৈরি করে সে। মাকে ‘শ্রদ্ধা’ জানাতে ওই ঘরে নিয়মিত ধূপও জ্বালাত নয়ন। পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই