লিবিয়ায় অভিবাসীদের গণকবর থাকার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করছে জাতিসংঘ। একই সাথে দেশটিতে অভিবাসীদের ধর্ষণ, হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগও খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
ভূমধ্যসাগর হয়ে অভিবাসনে প্রত্যাশীদের অন্যতম ‘ট্রানজিট’ উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। ইউরোপে পাড়ি জমানোর স্বপ্নে দেশটিতে আসা এই মানুষেরা হরহামেশা মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ছেন। চালানো হচ্ছে ধর্ষণ ও নির্যাতন। বন্দি করে আদায় করা হচ্ছে মুক্তিপণও। এবার জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের’ প্রতিবেদনেও অভিবাসীদের উপর নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
মিশনের সদস্যরা দেশটিতে অভিবাসীদের ‘গণকবর’ থাকার তথ্য পেয়েছেন। লিবিয়ার বানি ওয়ালিদ শহরের মরুভূমিতে ‘গণকবর’ আছে বলে তাদের জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন অভিবাসী। এক জনের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, তিনি নিজে সেখানে তিনজন অভিবাসীকে কবর দিয়েছেন।
গণকবরে কতজনের দেহ রয়েছে সেই তথ্য প্রতিবেদনে ছিল না। তবে মিশনের সদস্য চালোকা বেয়ানি জানিয়েছেন, নতুন দায়িত্ব পাওয়া একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ পরবর্তী অনুসন্ধান চালাবেন।
পূর্ব আফ্রিকা থেকে আগত বেশ কয়েকজন নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার তথ্যও জানিয়েছেন। একজন তার সাক্ষ্যে বলেছেন, ‘কোনো আটক অভিবাসী যদি ‘বানি ওয়ালিদ’ শব্দটি শুনতে পান তাহলেই তিনি কাঁদতে শুরু করেন। তারা সেখানে নারীদের স্তন ও যোনি পুড়িয়ে দেয়।’ লিবিয়ার সেবাহ শহরে অবস্থানরত অগ্নিদগ্ধ এক সুদানিজ অভিবাসী জানিয়েছিলেন, পরিবার মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় অপহরণকারীরা। এই অভিবাসী পরবর্তীতে মারা যান।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ১২০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে। লিবিয়ার অধিকারকর্মীদের হুমকি, প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর গোপন আটক কেন্দ্রগুলো নিয়েও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তিন সদস্যের মিশনের একজন চালোকা বেয়ানি বলেন, অভিবাসীদের জন্য লিবিয়ার পরিস্থিতি ‘ভীষণ ভীষণ ভয়ানক’। সূত্র : আল-জাজিরা/ইনফো মাইগ্রান্টস
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর