গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করেছে রাশিয়া। এই যুদ্ধে ইউক্রেনের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়াকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে দেশটির বিভিন্ন ধরনের কয়েক হাজার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমারা। এসব নিষেধাজ্ঞার আওতায় জ্বালানি তেল রফতানিও রয়েছে। আর তাতেই হয়েছে উল্টো-বিপদে পড়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইউরোপে জ্বালানি সংকট তীব্র হয়েছে। ফলে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কম হওয়া দূরের কথা, বরং বেড়েছে মস্কোর কাছ থেকে ডিজেল আমদানি।
গত মাসে (জুলাইয়ে) ইউরোপের দেশগুলোর রাশিয়ান উৎসের ডিজেল আমদানি ১৩ শতাংশ বেড়েছে (মাসিক হিসাবে)।
জ্বালানি পণ্যের লেনদেন অনুসরণকারী সংস্থা- ভরটেক্সা মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির মতে, জুলাইয়ে ইউরোপ বিপুল রাশিয়ান ডিজেল আমদানি করে। এমনকি তাদের রাশিয়ান ডিজেল আমদানি- অন্য উৎসের ডিজেল আমদানির চেয়ে বেশি হয়েছে দৈনিক প্রায় দুই লাখ ব্যারেল।
সার্বিকভাবে ২০২১ সালের জুলাইয়ের চেয়ে যা ২৩ শতাংশের মতো উচ্চহারে বেড়েছে (বার্ষিক হিসাবে)।
ইইউ চেয়েছিল রাশিয়ার জ্বালানি রাজস্বে ধস নামাতে। কিন্তু, তাদের সদস্য দেশগুলোর রাশিয়ান তেল কেনার এই বুভুক্ষ চাহিদা প্রমাণ করে– মস্কোকে শায়েস্তা করার ওই পরিকল্পনা কত বড় ভুল ছিল।
এর আগে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ ৯০ শতাংশ রাশিয়ান অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড) আমদানি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয় ইইউ সদস্যরা। তবে বিশ্ববাজারে জ্বালানির চড়া মূল্য এবং অন্য তেল-রফতানিকারক দেশের উৎপাদনে সীমাবদ্ধতা থাকায়– ইউরোপকে নিজস্ব চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শুরু থেকেই।
ডিজেলের মূল্য বাড়তে থাকায়- জ্বালানি পরিশোধনাগারগুলোও চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে উৎপাদন করতে কূল পাচ্ছে না।
ভরটেক্সার প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড ওয়েলশ বলেন, “ইইউ (রাশিয়ান) ডিজেল আমদানিতে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে– তা পুরোপুরি মেনে চলতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।”
এদিকে ইউরোপের সিংহভাগ ডিজেল আসে মহাদেশটির বিভিন্ন রিফাইনারিতে পরিশোধিত ক্রুড থেকে। করোনা মহামারীর শুরুতে চাহিদায় ধস নামলে, লোকসান কমাতে তখন অনেক রিফাইনারির সক্ষমতা হ্রাস করা হয়। সেই হ্রাস করা সক্ষমতা এই মুহূর্তে আবার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ক্রুড পরিশোধন করাটা হয়ে পড়েছে চ্যালেঞ্জিং।
তার ওপর আবার ইউরোপ বর্তমান ব্যবহারের পাশাপাশি আসন্ন শীত উপলক্ষেও জ্বালানি মজুদ করছে। সেজন্যও বেড়েছে ডিজেলের চাহিদা। সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার
বিডি প্রতিদিন/কালাম