ইউক্রেনের সোলেদার ও বাখমুত শহরের নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে জোরালো সংঘর্ষ চলছে। কিয়েভের হাত আরও শক্ত করতে সম্ভবত ব্যাটেল ট্যাংক পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব।
গত বছরের শুরুতে গোটা ইউক্রেন দখলের মতলব নিয়ে হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। তারপর থেকে প্রবল প্রতিরোধের মুখে একের পর এক এলাকা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে রুশ বাহিনী। এখন শুধু ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সোলেদার নামের ছোট খনি শহরের উপর নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো। নারী ও শিশুসহ প্রায় ৫০০ মানুষ সেখানে আটকে পড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি সোলেদারে দুটি সামরিক ইউনিটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, প্রবল হামলার মুখেও সৈন্যরা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং শত্রুর ব্যাপক ক্ষতি করছে।আগামী দিনগুলিতে তিনি সেই অঞ্চলে আরও সৈন্য পাঠানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। সোলেদার ও বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে জেলেনস্কি সৈন্যদের সব রকম অস্ত্রে সজ্জিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রাশিয়ার ‘ভাগনার গ্রুপ’ নামের ভাড়াটে বাহিনী বাখমুত ও সোলেদার দখলের দাবি করলেও মস্কো এখনো জয়ের ঘোষণা করেনি। গত ছয় মাসে নতুন করে কোনো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল করতে পারেনি রাশিয়া। বরং দনিয়েৎস্ক অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরও দুর্বল হয়ে উঠেছে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কির্বি বলেন, রাশিয়া সোলেদার ও বাখমুত শহর দখল করতে পারলেও যুদ্ধের উপর কোনো কৌশলগত প্রভাব পড়বে না। ইউক্রেনের প্রতিরোধের গতি কমানো যাবে না বলে তিনি মনে করেন।
হানাদার বাহিনীর সামরিক নেতৃত্বে বার বার রদবদল করে রাশিয়া মরিয়া হয়ে সামরিক সাফল্যের আশা করছে। এখন ভালেরি গেরাসিমভকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর নেতৃত্বে বসিয়ে রুশ নেতৃত্ব সেই উদ্যোগকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে।
ইউক্রেনের প্রতিরোধ আরও জোরদার করতে পশ্চিমা বিশ্ব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে অবশেষে ব্যাটেল ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেই দুদা ইউক্রেনকে জার্মানিতে তৈরি ১৪টি লেওপার্ড ব্যাটেল ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তার জন্য জার্মানির অনুমোদনের প্রয়োজন। ব্রিটেনও ট্যাংক পাঠানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে।
একাধিক দেশ এমন সিদ্ধান্ত নিলে জার্মানিও শেষ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করবে, এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ইউক্রেনকে লেওপার্ড ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহের জন্য জার্মানির মধ্যেও চাপ বাড়ছে। কিছু সূত্র অনুযায়ী পশ্চিমা বিশ্বে এমনকি বোমারু বিমান সরবরাহের প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা চলছে। ইউক্রেন সেইসঙ্গে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও চাইছে। সামরিক জোট ন্যাটো সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এড়াতে এতকাল ‘ভারি অস্ত্র' পাঠানোর বিষয়ে সংশয় দেখিয়ে এসেছে। কিন্তু রাশিার লাগাতার হামলার মুখে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেই প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে উঠছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত