ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর মার্কিন ভিসা বাতিলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। গত বৃহস্পতিবার বাইডেনের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান তারা।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ৪১ জন সদস্য চিঠিতে বাইডেনকে লেখেন, যখন সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি নষ্ট করেন, ভুল তথ্য ছড়ান, সহিংস চরমপন্থা উসকে দেন, তখন এর তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হতে পারে, তা তারা জানেন।
আইনপ্রণেতারা আরও বলেন, দায়িত্বে থাকাকালে কোনো অপরাধ করলে এর বিচার থেকে বাঁচতে বলসোনারো বা অন্য কোনো সাবেক ব্রাজিলীয় কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্যই আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত বলসোনারো। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর গত ৩০ ডিসেম্বর বলসোনারো দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় যান এবং এখন সেখানেই রয়েছেন। এর পরদিন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন বামপন্থী নেতা লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিক বলসোনারোর শত শত সমর্থক ৮ জানুয়ারি দাঙ্গায় লিপ্ত হন। তারা ব্রাজিলের কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনে হামলা চালান। এ ঘটনায় দেশে–বিদেশে তুমুল সমালোচিত হন বলসোনারো।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, বলসোনারো সম্ভবত এ-ওয়ান ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। বিদেশি নেতাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা সংরক্ষিত থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, কোনো ব্যক্তিবিশেষ নিয়ে তারা কমেন্ট করবে না। কিন্তু সাধারণ কোনো বিদেশি কর্মকর্তা এ-ওয়ান ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে অফিশিয়াল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আটকে গেলে তার ৩০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নিয়ম রয়েছে। অন্যথায় দেশের (যুক্তরাষ্ট্রের) স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দেশ ছাড়া করতে ব্যবস্থা নেয়।
এদিকে রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, পার্লামেন্ট ভবনসহ সরকারি বিভিন্ন ভবনে হামলার ঘটনায় ব্রাজিলের ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকেও তদন্তের আওতায় আনার বিষয়ে সায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ৮ জানুয়ারির দাঙ্গার ঘটনায় এই প্রথমবারের মতো সম্ভাব্য দায়ী ব্যক্তিদের মধ্যে বলসোনারোর নামও এসেছে।
এখন যদি ব্রাজিলের সর্বোচ্চ আদালত বলসোনারোর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে এবং তিনি ব্রাজিলে ফিরে যেতে অস্বীকার করেন, ব্রাজিল তখন মার্কিন ফেডারেল এজেন্টদের দ্বারা তাকে গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে পারে। বলসোনারো তখন প্রত্যর্পণের লড়াইয়ের চেষ্টা করতে পারেন এবং মার্কিন আদালতে আশ্রয় চাইতে পারেন। এটা হলে দীর্ঘ আইনি লড়াই শুরু হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল