মিডিয়া মোগল রুপার্ট মারডকের বয়স হয়েছে ৯৩। বয়সের কারণে তার বিশাল সাম্রাজ্যের ভার উত্তরাধিকারীদের হাতে তুলে দেওয়ার সময় এসেছে। গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, মারডক তার মিডিয়া সাম্রাজ্যের দায়িত্ব কেবলমাত্র এক ছেলের হাতে দিতে চান। তার মতে, লাচলানই এই দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্য এবং তার রাজনৈতিক বিশ্বাসের ধারক।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মারডক ঘোষণা দেন, তিনি ফক্স ও নিউজ কর্প-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ইমেরিটাস চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন। এর পর থেকেই লাচলান পুরো মিডিয়া সাম্রাজ্যের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মারডকের তিন সন্তান জেমস, এলিজাবেথ, এবং প্রুডেন্সের সঙ্গে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যমতে, রুপার্ট মারডক চান তার মিডিয়া সাম্রাজ্য রক্ষণশীল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিচালিত হোক। লাচলানকে নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে তিনি তার রাজনৈতিক বিশ্বাস অটুট রাখতে চান। কিন্তু মারডকের মৃত্যু হলে তার ট্রাস্টের চার সন্তানই সমানভাবে নিয়ন্ত্রণ পাবেন বলে পূর্বে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। নতুন করে তিনি আদালতে আবেদন করেন যাতে কেবল লাচলান কোম্পানির উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পান।
মারডকের ছয় সন্তানের মধ্যে জেমস, এলিজাবেথ এবং লাচলান দ্বিতীয় স্ত্রী আনা মারডকের সন্তান। এছাড়া, প্রথম স্ত্রীর সন্তান প্রুডেন্স এবং তৃতীয় স্ত্রী ওয়েন্ডি ডেংয়ের ঘরে আরও দুই সন্তান আছে, যাদের ট্রাস্টে ভোটাধিকার নেই। জেমস এবং লাচলানের মধ্যে সমস্যা থাকলেও, লাচলান কোম্পানির দখল নিয়ে নিয়েছেন। জেমস ২০১৯ সালে লাচলানের সহযোগিতা ছেড়ে দেন এবং বর্তমানে একটি বিনিয়োগ তহবিল পরিচালনা করছেন। এলিজাবেথ সিনেমা স্টুডিও চালান এবং প্রুডেন্স পারিবারিক ব্যবসায় কম জড়িত।
মারডকের নতুন উদ্যোগের ফলে পরিবারের অন্য তিন সন্তান লাচলানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা ফক্স নিউজের ডানপন্থী এজেন্ডার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এবং মিডিয়া আউটলটিতে বিভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ চান।
মারডকের মিডিয়া সাম্রাজ্য প্রধানত দুটি কোম্পানির মধ্যে বিভক্ত: ফক্স এবং নিউজ কর্প। তার চার বড় সন্তান ট্রাস্টে সমানভাবে ভোটাধিকার ভোগ করেন। মারডক লাচলানের ভোটের ক্ষমতা বাড়াতে চান যাতে তাকে চ্যালেঞ্জ করা না যায়। তবে এই পরিবর্তন কোম্পানির মালিকানায় প্রভাব ফেলবে না।
মারডকের রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে পরিবারে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, তা সহজে মিটবে না। ফক্সের ভবিষ্যৎ নীতি ও দিক নির্ধারণ করতে এই দ্বন্দ্বের পরিণতি গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল