গত কয়েক মাস ধরে রাশিয়া ইউক্রেনে উত্তর কোরিয়ার মিসাইল দিয়ে হামলা চালিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক একটি হামলায় কিয়েভে উত্তর কোরিয়ার তৈরি চারটি কেএন-২৩ মিসাইল ব্যবহার করে আঘাত হানে রাশিয়া। এই হামলায় বাবা-ছেলে নিহত হওয়ার ঘটনাও উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। জানা গেছে, রাশিয়া এসব মিসাইল উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে পেয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার দাবি, তারা জাতিসংঘের কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেনি। তবে স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিতে দেখা গেছে, পিয়ংইয়ং সম্প্রতি রাশিয়ায় ১১ হাজারেরও বেশি কনটেইনার পাঠিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে ভ্লাদিভোস্টকে কিম জং উন এবং ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ছে।
বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রে আসে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার সামরিক সম্পর্ক। পিয়ংইয়ং গোপনে মিসাইল এবং আর্টিলারি শেল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিনিময়ে উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র এবং মিসাইল প্রযুক্তি সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুতিন। এই সামরিক চুক্তির আগে, উত্তর কোরিয়ার প্রধান সামরিক মিত্র ছিল চীন। তবে চুক্তির পর রাশিয়া সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক বেইজিংয়ের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে ডেভিড পিয়ার্সন এবং চোই স্যাং-হুন বলেছেন, এই সম্পর্কের কারণে চীনের ওপর উত্তর কোরিয়ার নির্ভরশীলতা কমে আসতে পারে, যা চীনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯৫ শতাংশ চীনের সঙ্গে হওয়া সত্ত্বেও, রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক ও প্রযুক্তি চুক্তির পর সেই পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে পারে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, উত্তর কোরিয়া চীনের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করলেও, চীনের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না। চীন মনে করে, কিম জং উনের ওয়ার্কার্স পার্টি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অধীনস্থ, এবং অর্থনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হওয়ার কারণে উত্তর কোরিয়ার রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খুব বেশিদূর এগোবে না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল