ইসরায়েলের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলমান হামলায় মঙ্গলবার আরও ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ২০ জনে পৌঁছেছে। এই মর্মান্তিক তথ্য প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, হামলায় আহতের সংখ্যা প্রায় ৯৫ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের মধ্যে ৩২ জন নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও ১০০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধারকাজ এখনো শুরু করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকর্মীরা প্রচেষ্টার পরও ধ্বংসাবশেষ সরাতে পারছেন না, ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের দাবি, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানানো হলেও ইসরায়েলি বাহিনী তাদের হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার বিভিন্ন স্থানে নিরন্তর বোমা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় গাজার অবকাঠামোর বিশাল অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, এবং গির্জার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও এই হামলার শিকার হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, এবং খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন। গাজায় মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে ইতোমধ্যেই প্রায় ২০ লাখ মানুষ গাজা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। গাজার ৬০ শতাংশের বেশি অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়েছে, যা পুনর্গঠন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলের এই আক্রমণকে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে 'গণহত্যা' হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, এবং ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযুক্ত হয়েছে।
গাজার স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন তাদের জীবনকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল