প্রিয়জন, সহকর্মী, এমনকি পথে দেখা মানুষের সাথেও ভুল বোঝাবুঝির ইতি টানতে কিংবা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে হাসিই মানুষের মোক্ষম হাতিয়ার। অনেক বড় ঘটনার নিমিষেই সমাধান করে দেয় এই হাসি। হাসি বিনিময়ে অনেক বড় সংঘাতও এড়ানো যায় সহজে। তবে এই হাসিকে কেবল মানুষই সংকট কাটানোর হাতিয়ার বানায় না। সামুদ্রিক প্রাণী ডলফিনও নাকি ঘটায় একই কাণ্ড। ডলফিনরা নাকি নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে 'হাসি'কে ব্যবহার করে হাতিয়ার হিসেবে।
সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। তারা জানিয়েছেন, বোতলনোজ প্রজাতির ডলফিনরা খেলাধুলার সময় মুখ খোলা রেখে 'হাসি'র মতো অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। আই সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ডলফিনরা খেলার সময় মুখ খোলা রেখে এক ধরনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে যা অনেকটা 'হাসির' মতোই দেখায়।
ইতালি ও ফ্রান্সের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা গবেষণাটি পরিচালনা করেন। গবেষণার জন্য রোমের জুমারিনের ১১টি ডলফিন এবং পশ্চিম ফ্রান্সের প্ল্যানেটে সোভেজে ১১টি ডলফিনের ওপর এ পরীক্ষা চালিয়েছেন তারা। এই গবেষকরা ডলফিনরা একে অপরের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করছে, মানব প্রশিক্ষকের সঙ্গে তারা কেমন ব্যবহার করে। কেবল একা খেলার সময় তাদের গতিবিধি কেমন, তা পর্যবেক্ষণ করেছেন।
এসময় দেখা গেছে, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলো তাদের সঙ্গীরা দৃষ্টিসীমার মধ্যে এলেই হাসে। এ ক্ষেত্রে ঠিক এক-তৃতীয়াংশ সময় অপর সঙ্গীও পাল্টা হাসিতে তার জবাব দেয়। গবেষকরা ধারণা করছেন, এটি ডলফিনদের যোগাযোগের একটি মাধ্যমও হতে পারে। তারা ধারণা করছেন, খেলার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে লড়াই এড়াতে ডলফিনরা একে অপরকে হাসি দিয়ে সমস্যা মিটিয়ে নেয়।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের সান অ্যান্টেনিও'র সেন্ট মেরি ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং ডলফিন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হিদার হিল বলেন, এ অভিব্যক্তি মানুষের 'হাসির' মতো মনে হলেও, এ সম্পর্কে অতিরিক্ত ধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাকাই ভালো।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল