লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে একটি পৌরসভা ভবনে হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। নিহতদের মধ্যে ওই পৌরসভার মেয়রও রয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ।
বৃহস্পতিবার আলাদা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় দক্ষিণ লেবাননের একটি প্রধান শহরে পৌর সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে মেয়রসহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
হামলার সময় মেয়র সেখানে বৈঠক করছিলেন এবং হামলায় পৌর সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে গেছে।
গত মাসের শেষের দিকে লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির রাষ্ট্রীয় কোনো ভবনে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।
এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন লেবাননের কর্মকর্তারা। প্রাদেশিক রাজধানী নাবাতিহে হওয়া এই হামলায় ৫০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন।
দেশটির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এই হামলা প্রমাণ করে যে, সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযানে এখন লেবানন রাষ্ট্রকেও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
এই হামলার নিন্দা জানিয়ে লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে কাউন্সিলের বৈঠকে হামলা চালিয়েছে। শহরের পরিষেবা এবং ত্রাণ পরিস্থিতি নিয়ে পৌরসভা ভবনে আলোচনা করার সময় ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের সভাকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালায়।
লেবাননে জাতিসংঘের মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, বুধবার সকালে দক্ষিণ লেবাননের কেফার কেলার কাছে তাদের ওয়াচটাওয়ারে ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গুলি ছুড়তে দেখেছেন তাদের শান্তিরক্ষীরা। গুলিতে দুইটি ক্যামেরা ধ্বংস হয়ে গেছে। পাশাপাশি টাওয়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিফিল।
অবশ্য ইউনিফিলের বিবৃতির বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
এদিকে, পৌরসভা ভবনগুলোতে বিমান হামলায় মেয়র এবং আরও ১৫ জনকে হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন লেবাননে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়কারী দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাবাতিহে।
জেনাইন হেনিস-প্লাসচের্ট মেয়র আহমেদ কাহিলের হত্যাকাণ্ডকে উদ্বেগজনক অভিহিত করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।
নাবাতিহের গভর্নর হাওয়াইদা তুর্ক বিবিসিকে বলেন, বুধবারের এই হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন পৌরসভার কর্মীও রয়েছেন। যারা ওই এলাকায় থাকা বেসামরিক লোকদের সহায়তার সমন্বয়কারী ছিলেন।
যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানান, ওই এলাকায় কয়েক ডজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধাকে লক্ষ্যবস্তুকে করে অভিযান চালিয়েছে তাদের বাহিনী। ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর ব্যবহৃত একটি টানেল ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/কেএ