আধুনিক বিশ্বে রাজপরিবারগুলোর প্রভাব-প্রতিপত্তি আর আগের মতো নেই। অধিকাংশ দেশেই তাদের সম্মানজনক একটি আসনে বসিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু সব ক্ষমতাই চলে গেছে জনগণের হাতে। কিছু কিছু দেশে রাজপরিবারগুলো একেবারেই বিলীন হয়ে গেছে।
কিছু রাজপরিবার এখনো টিকে থাকার লড়াই করে যাচ্ছে। তবে ব্রিটিশ রাজপরিবার বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পরিধি এখন অনেক ছোট হয়ে আসলেও তাদের রাজপরিবারকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। সম্প্রতি রাজপরিবারের একটি খবরে তোলপাড় নেট দুনিয়া। ব্রিটিশ রাজপরিবারের সাসেক্সের ডিউক যুবরাজ হ্যারি এবং ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেলের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এই গুঞ্জনের মধ্যে বিয়ের আংটি ছাড়াই দেখা গেছে মেগানকে। আর তাতেই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে নেটিজেনদের।
রয়্যাল নিউজ নেটওয়ার্কের বরাত দিয়ে ভারতের এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এক অনুষ্ঠানে দেখা যায় প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেলকে। সেখানে তাকে বাগদানের আংটি ছাড়াই দেখা গেছে।
গত ১১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বালিকা দিবস উপলক্ষে গ্রেটার সান্তা বারবারা এলাকায় গার্লস ইনকরপোরেটেডে মেয়েদের সঙ্গে ছবি আঁকা ও কারুকাজে শামিল হন ডাচেস অব সাসেক্স। ওই অনুষ্ঠানে মার্জিত পোশাক পরলেও মেগানের হাতে বাগদানের আংটিটি ছিল না, যা অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বিয়ের আগের বছর ২০১৭ সালে প্রিন্স হ্যারির ডিজাইন করা আইকনিক আংটিটির গভীর ব্যক্তিগত তাৎপর্য রয়েছে। আংটিটির সঙ্গে হ্যারির প্রয়াত মা প্রিন্সেস ডায়ানার যোগ রয়েছে। কারণ, যে তিনটি হীরা বসানো আছে তার দুটিই প্রিন্সেস ডায়ানার দেয়া। একটি বতসোয়ানা থেকে আনা। কেনসিংটন প্রাসাদে মেগানকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার সময় আংটিটি তাকে দিয়েছিলেন হ্যারি। তবে, এবাই প্রথমবার ছিল না যে মেগানকে তার বাগদানের আংটি ছাড়াই দেখা গিয়েছিল।
বিয়ে বিচ্ছেদের বিষয়টি নিয়ে জানা যাচ্ছে, প্রিন্স হ্যারি এবং মেগানের মধ্যে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। প্রিন্স হ্যারি মেগানের নিয়ন্ত্রণ মানতে চাইছেন না।
আরও জানা যায়, প্রিন্স হ্যারি তার সন্তানদের তার পরিবার এবং দেশ সম্পর্কে জানাতে চান, যাতে মেগানের তেমন একটা মত নেই। এই গুঞ্জনের মধ্যেই খবর প্রকাশিত হয়েছে যে পর্তুগালে একটি বাড়ি কিনতে যাচ্ছেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান দম্পতি।
যে কারণে বিচ্ছেদের গুঞ্জন: বিনোদনসংক্রান্ত অনলাইন সংবাদমাধ্যম রাডারঅনলাইনের খবর অনুযায়ী, ডিউক অব সাসেক্স সম্প্রতি আফ্রিকার লেসোথোতে তার ৪০তম জন্মদিন পালন করেন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে। যেখানে তার পরিবার উপস্থিত ছিল না।
সাংবাদিকের নিশ্চিত ধারণা, হ্যারির এই কাজই প্রমাণ করে তার সঙ্গে মার্কেলের সম্পর্কে চিড় ধরে গিয়েছে। রাজদম্পতি এতকাল বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যুগলেই যেতেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে তাদের একসঙ্গে আর জনতার মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।
স্টার ম্যাগাজিন লিখেছে, হ্যারি আফ্রিকা ছাড়াও নিউ ইয়র্কেও একা গিয়েছিলেন। যেখানে তাকে বেশ হাসিখুশি এবং খোলামেলা লেগেছিল।
পত্রিকাটির মতে, হ্যারি এবং মেগান পরীক্ষামূলকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের পথে চলেছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন তাদের সম্পর্ক আর টেকার পথে যাবে না। জানা গেছে, ৪৩ বছর বয়সি মেগান মার্কেলের অতি নিয়ন্ত্রণবাদী মনোভাবের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছেন না যুবরাজ।
এদিকে, ক্যালিফোর্নিয়াতে প্রিন্স আর্চি এবং প্রিন্সেস লিলিবেটের সঙ্গেই রয়েছেন মেগান মার্কেল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে নাকি স্বামীর সঙ্গে নিউ ইয়র্কে যেতে পারেনি মেগান। শোনা যাচ্ছে, তিনি নাকি আসন্ন নেটফ্লিক্সের শো এবং ব্র্যান্ডের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। যদিও হ্যারি ও মেগানের বন্ধুরা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, এখনো আদর্শ এবং সুখী দম্পতি হিসেবেই রয়েছেন দুই জনে। তবে পেশাগত দিক থেকে ভিন্ন রাস্তা বেছে নিয়েছেন তারা। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস
বিডি প্রতিদিন/নাজিম