ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তি চুক্তি হলে তা কিয়েভ কখনোই মেনে নেবে না।
বৃহস্পতিবার পশ্চিম ইউক্রেনের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় জেলেনস্কি বলেন, "একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা আমাদের অন্তর্ভুক্তি ছাড়া কোনো চুক্তি মেনে নিতে পারি না। আমি এটি আমাদের অংশীদারদের কাছে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি। ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো দ্বিপক্ষীয় আলোচনা আমরা মেনে নেব না।"
জেলেনস্কির এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেন।
জেলেনস্কি বলেন, "ট্রাম্পের প্রথমে পুতিনের সঙ্গে কথা বলাটা আমাদের জন্য সুখকর ছিল না।"
তিনি আরও জানান, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা তখনই সম্ভব, যখন পুতিনকে থামানোর একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে।
ন্যাটো প্রধানের হুঁশিয়ারি: ‘যুদ্ধকালীন মনোভাব গ্রহণ করতে হবে’
এদিকে ইউরোপের দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুট বলেছেন, ন্যাটোর বেশ কয়েকটি সদস্য দেশ প্রতিরক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সামরিক জোট হিসেবে এখন "যুদ্ধকালীন মনোভাব" গ্রহণ করা জরুরি।
বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে ন্যাটো সদস্য দেশগুলো প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে একটি হালনাগাদ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।
রুট বলেন, "কয়েকটি সদস্য দেশ আজকের বৈঠকে প্রতিরক্ষা ব্যয়ে বড় বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। আমি আশা করি, আজকের বৈঠক থেকে ফেরার পর অনেক মন্ত্রী নতুন তাগিদ অনুভব করবেন।"
তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালে ন্যাটোর ইউরোপীয় ও কানাডিয়ান সদস্যরা প্রতিরক্ষায় মোট ৪৮৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, "জোটকে আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।"
প্রতিরক্ষা উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ
প্রতিরক্ষা উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে রুট বলেন, "আমাদের যুদ্ধকালীন মনোভাব গ্রহণ করা দরকার এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আমাদের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের যুদ্ধ শেষ করার উদ্যোগ সম্পর্কে ন্যাটো সদস্যরা অবগত রয়েছে এবং তারা ইউক্রেনকে অব্যাহত সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে, যেন এই নিষ্ঠুর আগ্রাসনের যুদ্ধ ন্যায়সংগত ও স্থায়ীভাবে শেষ হয়।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আশিক