ইন্দোনেশিয়ায় সহিংস বিক্ষোভের জেরে আটজন নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাজধানী জাকার্তার বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয় এবং শহরে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়।
পুলিশের মুখপাত্র স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল কমপাস টিভিকে বলেন, তারা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও শান্তি বজায় রাখতে কাজ করছে। রবিবার রাতে সংসদের আশপাশে সাঁজোয়া যান ও মোটরসাইকেল কনভয়ের শক্তি প্রদর্শন করে পুলিশ, যাতে নতুন করে সহিংসতা না হয়।
অর্থনৈতিক সংকট ও আইনপ্রণেতাদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘিরে এই আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষোভে রূপ নেয়। গত বৃহস্পতিবার রাজধানী জাকার্তায় বিক্ষোভের সময় দেশটির অভিজাত আধাসামরিক পুলিশ ইউনিটের একটি গাড়ি ২১ বছর বয়সী ডেলিভারি কর্মী আফফান কুরনিয়াওয়ানকে চাপা দিলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এরপর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়।
জাকার্তা থেকে বিক্ষোভ দ্রুত বানডুং, সেমারাং, সুরাবায়া এবং উত্তর সুমাত্রার রাজধানী মেদানে ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো ক্ষমতায় আসার পর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে মনে করা হচ্ছে।
সোমবার অর্থনৈতিক বিষয়ক সমন্বয়মন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হার্তার্তো জানিয়েছেন, আন্দোলনে এখন পর্যন্ত অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন।
‘অ্যালায়েন্স অব ইন্দোনেশিয়ান উইমেন’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছে, তারা সংসদের সামনে বিক্ষোভ স্থগিত করেছে সহিংসতা এড়ানোর জন্য। পোস্টে বলা হয়, “পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে।”
এদিকে, বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো সংসদ সদস্যদের বাড়তি সুবিধা কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে একই সঙ্গে তিনি সেনা ও পুলিশকে দাঙ্গাকারী ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাড়ি ও সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
দেশের এই সংকটের কারণে প্রাবোও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি স্মরণে একটি সামরিক কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের জন্য চীনে তার পরিকল্পিত সফর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম