সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে স্কুলগুলোতে অনলাইন খাবার সরবরাহ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নতুন এই নীতির আওতায় অভিভাবকদের সন্তানদের জন্য খাবার পাঠাতে হলে তা সরাসরি স্কুলের রিসেপশনে জমা দিতে হবে।
খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, কর্তৃপক্ষ দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হিসেবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে।
নিউট্রিশাস মিলস ও অন-সাইট সাপোর্ট
উডলেম এডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর নুফাল আহমেদ বলেন, “আমাদের ক্যান্টিন এমওএইচ মানসম্মত খাবার সরবরাহ করে। তাই বাইরে থেকে অনলাইন অর্ডারের কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো শিক্ষার্থী যদি লাঞ্চ আনতে ভুলে যায়, আমাদের কর্মীরা তাকে স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে সহায়তা করে।”
তিনি আরও জানান, খাবারের নিরাপত্তা, অ্যালার্জি এবং সাংস্কৃতিক পছন্দ মাথায় রেখে দুবাই মিউনিসিপ্যালিটি (ডিএম) ও দুবাই হেলথ অথরিটি (ডিএইচএ)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
একইভাবে জেমস এডুকেশন সম্প্রতি অভিভাবকদের কাছে একটি সার্কুলার পাঠায়, যেখানে বলা হয়, “অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিস (যেমন তালাবাত, নুন ইত্যাদি) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অভিভাবকদের অবশ্যই স্কুল রিসেপশনে গিয়ে আন্ডারটেকিং ফর্মে স্বাক্ষর করে খাবার জমা দিতে হবে।”
যখন বাচ্চারা খাবার আনতে ভুলে যায়
জেএসএস প্রাইভেট স্কুল দুবাইয়ের প্রিন্সিপাল চিত্রা শর্মা বলেন, “শিক্ষার্থী লাঞ্চ আনতে ভুলে গেলে আমরা দ্রুত অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। চাইলে তারা ক্যাফেটেরিয়ার স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে পারেন। আমরা মেন্যু নিশ্চিত করে তাদের অনুমতি নেই।”
তিনি আরও জানান, “শিক্ষার্থীদের নিজের খাবারের দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করা হয়। এটি তাদের স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীলতা শেখায়।” তবে অনলাইন ডেলিভারি সম্পর্কে তিনি বলেন, “বর্তমানে অনুমতি নেই, তবে ভবিষ্যতে ডিএইচএ যদি নতুন নির্দেশনা দেয়, আমরা বিবেচনা করতে পারি।”
আবুধাবিতে নতুন উদ্যোগ
আবুধাবির শিক্ষা ও জ্ঞান বিভাগ (এডিইকে) চলতি একাডেমিক টার্ম থেকে স্বাস্থ্যকর খাদ্যনীতি কঠোর করেছে।
দিয়াফাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল আবুধাবির প্রিন্সিপাল ডেভিড ফ্লিন্ট জানান, “আমাদের স্কুলে এখন ক্যাশলেস পারচেজ সিস্টেম চালু হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর আইডি ব্যাজের মাধ্যমে পিতামাতারা আগেভাগেই অনলাইনে ব্যালান্স রিচার্জ করতে পারেন। এতে বাচ্চারা সহজে ক্যাফে থেকে স্বাস্থ্যকর খাবার কিনতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “খাবারের তালিকা থেকে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার, জাংক ফুড ও কোমল পানীয়। বরং ভেজিটেরিয়ান, ভেগান ও গ্লুটেন-ফ্রি বিকল্প রাখা হয়েছে। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যকর খাবারকে শুধু অভ্যাস নয়, শিক্ষারই একটি অংশ হিসেবে গ্রহণ করুক।”
সূত্র: খালিজ টাইমস
বিডি প্রতিদিন/আশিক