বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

৫০০ কোটি মানুষ পানি পাবে না

ডব্লিউএমও-এর তথ্য

দিন দিন বসবাসের অনুপযুগী হয়ে উঠছে পৃথিবী। আর এ জন্য মানুষই দায়ী। সাময়িক স্বস্তির জন্য পৃথিবীর বুকে নানা নেতিবাচক কর্মকান্ড চালাচ্ছে। তাতে পৃথিবী গরম হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, উষ্ণায়নের জেরে দ্রুতহারে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পৃথিবীর জলস্তর উদ্বেগজনক ভাবে নিচে নেমে যেতে শুরু করেছে। যা বিশেষভাবে নজরে এসেছে গত ২০ বছরে।

২৯ বছর পর আর পানি পাবে না উপমহাদেশের ভারত-বাংলাদেশসহ শুরু করে বিশ্বের অন্তত ৫০০ কোটির বেশি মানুষ। এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘের অধীনস্থ ওয়ার্ল্ড মেটিরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও)। সংস্থাটির সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, উষ্ণায়নের জেরে দ্রুতহারে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পৃথিবীর পানিস্তর উদ্বেগজনকভাবে নিচে নেমে যেতে শুরু করেছে।

ভূপৃষ্ঠ, ভূপৃষ্ঠের ঠিক নিচের স্তর, বরফ ও তুষারে জমা পানির স্তর গত দুই দশকে যে হারে কমেছে তা আগে কখনো হয়নি। গত ২০ বছরে এই পানিস্তর প্রতি বছরে ১ সেন্টিমিটার করে নেমে যাচ্ছে। আর সেটা ২০১৮ সালেই বুঝতে পেরেছেন বিশ্বের ৩৬০ কোটি মানুষ। বছরে এক মাস তাঁরা কোনো পানি পাননি।

পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্র অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিতে পারলে ২০৫০ সালে পৌঁছে ছিটেফোঁটা পানিও পাবেন না  ভারত-সহ বিশ্বের ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ। চরম পানির অভাব দেখা দেবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম অংশ, ভূমধ্যসাগর, উত্তর ও দক্ষিণ আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায়। চরম জলাভাবে ভুগবে দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়াও। ডব্লিউএমওর রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ২০ বছরে বন্যাঘটিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা তার   আগের দুই দশকের চেয়ে ১৩৪ শতাংশ বেড়েছে।    খরায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আফ্রিকার দেশগুলো।  রিপোর্টের শিরোনাম- ‘দ্য স্টেট অব ক্লাইমেট সার্ভিসেস ২০২১ : ওয়াটার’।

২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে অন্তত ৩০৬ কোটি মানুষ এক মাসের পানির সংকটে ভুগেছেন। ২০৫০ সালের মধ্যে  এই সংখ্যাই পৌঁছে যাবে ৫০০ কোটিতে। পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে জাতিসংঘের ওই রিপোর্টে। বলা হয়েছে, আগামী ২৯ বছরের মধ্যে এই জল সংকট এড়াতে চাইলে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

 জল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে প্রয়োজনমতো, আর লাগাতে হবে প্রচুর গাছ।

দিন দিন পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়েই চলেছে, এর ফলে প্রকৃতির আচরণে বদল আসছে। সময়মতো বৃষ্টি হচ্ছে না। কখনো বন্যা, কখনো খরায় ভুগতে হচ্ছে মানুষকে। এতে চাষের কাজেও ক্ষতি হচ্ছে। সংকট দেখা দিচ্ছে খাদ্যের। গত ২০ বছরেও পানীয় জল অনেকটা কমে এসেছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। পৃথিবীর মাত্র ০.৫ শতাংশ জল মানুষের ব্যবহারের যোগ্য।

ডব্লিউএমওর প্রধান বলেছেন, ‘সব রাষ্ট্রনেতাই বলছেন এবার একটা কিছু করতেই হবে যাতে উষ্ণায়ন আর না বাড়ে। কিন্তু সেই কাজগুলো আজ না করে কাল করব বলে ফেলে রাখলে হবে না। সেরে ফেলতে হবে অবিলম্বে। যে প্রক্রিয়াটাই এখনো অনেক দেশে শুরু হয়নি।’

সর্বশেষ খবর