প্রশান্ত মহাসাগরের পানির নিচের আগ্নেয়গিরিতে বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের একটি ঘটনার পর পলেনেশীয় দ্বীপপুঞ্জ টোঙ্গায় সুনামি আঘাত হেনেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ফুটেজে দেখা গেছে, সাগরের পানি তীর উপচে শহরের ভিতরে ঢুকে পড়ছে, পানি একটি গির্জা ও কয়েকটি বাড়ির ভিতর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, টোঙ্গার রাজধানী নুকু’আলোফায় আগ্নেয়গিরি থেকে উদ্গিরিত ছাই এসে পড়ছে।
গতকাল অগ্ন্যুৎপাতের পরপরই নিকটবর্তী টোঙ্গা, ফিজি ও নিউজল্যান্ডে সুনামির সতর্কতা জারি করে কর্তৃপক্ষ। সতর্কতা জারির পর টোঙ্গার বাসিন্দারা উঁচু স্থানগুলেতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য ছুটে যায়। হুঙ্গা-টোঙ্গা-হ্ঙ্গুা হা’আপাই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের পর দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে একটি শকওয়েভ ছড়িয়ে পড়ে। এ আগ্নেয়গিরি থেকে টোঙ্গার রাজধানী নুকু’আলোফা মাত্র ৬৫ কিলোমিটার উত্তরে।
টোঙ্গার এক বাসিন্দা মেরে টাউফা জানান, তাদের পরিবার খাবারের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণ ঘটে আর তার ছোট ভাই মনে করেছিলেন কাছে কোথাও বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে।
‘আমি সবাইকে টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে বলি’, বলেন তিনি। তারপর তিনি যা জানতে পারেন তা হলো তাদের বাড়িতে পানি ঢুকছে। ‘চারদিকে চিৎকারের শব্দ, পুলিশ সবাইকে নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে বলছে, উঁচু জায়গায় চলে যেতে বলছে’, বলেন তিনি। টোঙ্গার ভূতাত্ত্বিক বিভাগ জানায়, গ্যাস, ধোঁয়া ও ছাইয়ের কু ুলি আকাশের অন্তত ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত উপরে উঠে গিয়েছিল। অন্তত ৮ মিনিট স্থায়ী অগ্ন্যুৎপাত এত প্রচন্ড ছিল যে এর শব্দ উৎপত্তিস্থল থেকে অন্তত ৮০০ কিলোমিটার দূরে ফিজি থেকে ‘জোরাল বজ্রধ্বনির’ মতো মনে হয়েছে বলে সেখানকার রাজধানী সুভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ফিজি সরকার একটি সুনামি সতর্কতা জারি করেছে এবং উপকূলের নিচু স্থানগুলোতে বাসিন্দাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে।
২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দূরবর্তী নিউজিল্যান্ড ঝড়ের সময়ের মতো ঢেউ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি নর্থ আইল্যান্ডের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের উপকূলে ‘শক্তিশালী ও অস্বাভাবিক স্রোত এবং অপ্রত্যাশিত ঢেউ’ দেখা যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে। স্থানীয় পূর্বাভাসকারী ওয়েদার ওয়াচ টুইটারে জানায়, অগ্ন্যুৎপাতের যে শক্তি মুক্ত হয়েছে তা বিস্ময়কর। নিউজিল্যান্ডজুড়ে সোনিক বুমের শব্দের মতো শোনা গেছে বলে জানায় সংস্থাটি।
