শনিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

চীন ও রাশিয়াকে সতর্কতা যুক্তরাজ্যের

স্নায়ুযুদ্ধের পরবর্তী যে কোনো সময়ের মধ্যে এখন এ দেশ দুটি ‘বেশি সাহসী হয়ে উঠেছে’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে সতর্ক করে ব্রিটেন বলেছে, গণতন্ত্রের জন্য স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পশ্চিমা দেশগুলো একজোট হয়ে দাঁড়াতে পারে। স্নায়ুযুদ্ধের পরবর্তী যে কোনো সময়ের মধ্যে এখন এ দেশ দুটি ‘বেশি সাহসী হয়ে উঠেছে’ বলে মন্তব্য করেছে ব্রিটেন।

গতকাল অস্ট্রেলিয়ার লোয়ি ইনস্টিটিউটে দেওয়া এক বক্তৃতায় ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেন, বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলায় পশ্চিমকে অবশ্যই একসঙ্গে সাড়া দিতে হবে, ভারত মহাসাগরীয় ও সংলগ্ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে হবে এবং ‘বিশ্বব্যাপী হানাদারদের মুখোমুখি হতে হবে’। ট্রাস বলেন, ‘বৈশ্বিক হানাদাররা এমন সাহসী হয়ে উঠেছে যা স্নায়ুযুদ্ধের পর আর দেখিনি আমরা। তারা একনায়কতন্ত্রকে একটি সেবা হিসেবে বিশ্বব্যাপী রপ্তানি করতে চায়। এ কারণেই বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া ও মিয়ানমারের স্বৈরাচারী শাসকরা মস্কো ও বেইজিংয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের পেয়েছে।’ ‘বৈশ্বিক হানাদারদের মুখোমুখি হতে’ বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েল, ভারত, জাপান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো মিত্রদের সঙ্গে পশ্চিমের কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এখন মুক্ত বিশ্বের তাদের নিজেদের মাঠে দাঁড়ানোর সময়।’ রয়টার্স জানিয়েছে, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে একটি উত্তেজনাপ্রবণ অভিজাতদের দ্বারা গঠিত দুর্নীতিপরায়ণ স্বৈরাচারী শাসন কবলিত দেশ হিসেবে বিবেচনা করে। যারা ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়াকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে এবং বিদেশে উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দাগিরি ও হত্যা চেষ্টা চালিয়েছে। রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, পশ্চিম বিভক্তির গোলাকধাঁধায় ঘুরপাক খাচ্ছে, রুশভীতিতে আক্রান্ত হয়েছে আর কী করতে হবে তা নিয়ে মস্কোকে লেকচার দেওয়ার কোনো অধিকার তাদের নেই। চীন বলেছে, পশ্চিম এখনো মনে করছে ঔপনিবেশিক আমলের মতো তারা বিশ্বজুড়ে দাদাগিরি করতে পারবে আর বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়াই বেইজিং তার নিজের পথে চলতে পারবে। ইউক্রেন নিয়ে চলতে থাকা উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়ার তার প্রতিবেশী দেশটিতে আক্রমণ চালালে তারা কী করবে তাই নিয়ে কাজ করছে পশ্চিমা দেশগুলো। ট্রাস পুতিনকে সতর্ক করে ‘বড় ধরনের কৌশলগত ভুল করার আগেই’ ইউক্রেন থেকে সরে আসার ও নিবৃত্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ‘ক্রেমলিন ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আক্রমণের মাধ্যমে শুধু ভীষণ বেকায়দায় পড়াসহ জীবনহানি হয়, যেমন হয়েছিল সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধে ও চেচনিয়ার সংঘাতে।’ ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত আফগানিস্তানে ১৫ হাজারেরও বেশি সোভিয়েত সেনা প্রাণ হারিয়েছে।, এতে কয়েক লাখ আফগান নিহত হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে আন্তর্জাতিক সামরিক জোটের সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি সেনার মৃত্যু হয়। এই সময়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের যুদ্ধকবলিত এলাকাগুলোয় প্রায় ২ লাখ ৪১ হাজার লোক নিহত হয়। 

সর্বশেষ খবর