বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ইউক্রেন যুদ্ধে কি ন্যাটো নতুন ভূমিকা নেবে

রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রসহ সহযোগী দেশগুলো সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছে

ইউক্রেন যুদ্ধে কি ন্যাটো নতুন ভূমিকা নেবে

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা বিশ্ব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা করছে। এ দেশগুলো বলছে, আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে যতটা সহায়তা করা সম্ভব, সামরিক সাহায্য ততটুকুই করা হচ্ছে। এত কিছুর পরও কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর সরাসরি সংঘাত এড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সহযোগী দেশগুলো সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছে। ইউক্রেনের সরকার আরও ভারী অস্ত্র ও সরঞ্জাম দাবি করেও সেই ‘সংযম’-এর বাঁধ ভাঙতে পারেনি। ইউক্রেনের ওপর ‘নো ফ্লাই’ জোন ঘোষণা করার দাবিও মেনে নেয়নি ন্যাটো। কিন্তু হঠাৎ গতকাল এ অবস্থার ছন্দপতন ঘটে। ইন্দোনেশিয়ার বালুতে জি-২০ সম্মেলনের মধ্যেই পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর প্রথমেই এ হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়। তড়িঘড়ি আলোচনায় বসেন ন্যাটো ও বিশ্ব নেতারা। কিন্তু বৈঠকের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘সম্ভবত’ রাশিয়া থেকে ছোড়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ন্যাটোর ভূমিকা নিয়ে নতুন করে তর্কবিতর্ক শুরু হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়াতে যতটা সম্ভব সংযম দেখানোর জন্য চাপ রয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে ন্যাটোর জমিতে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত হামলা ঘটলে ন্যাটো যে বসে থাকবে না সে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ন্যাটো পূর্ব ইউরোপ ও বাল্টিক দেশগুলোতে সামরিক প্রস্তুতি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ সদস্য দেশগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তৎপরতা আগেই শুরু হয়ে গেছে।

যদি কখনো প্রমাণিত হয়, রাশিয়া পোল্যান্ড বা অন্য কোনো ন্যাটো দেশে হামলার জন্য দায়ী, সে ক্ষেত্রে ন্যাটোর সদস্য দেশ হিসেবে সে দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথ প্রতিরক্ষা নীতির ভিত্তিতে বাকিদের সহায়তা চাইতে পারে, যা ‘আর্টিকেল ফাইভ’ নামে পরিচিত। সেই নীতি অনুযায়ী যে কোনো সদস্য দেশ আক্রান্ত হলে গোটা সামরিক জোট সে দেশের সামরিক সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাধ্য। ১৯৪৯ সালে ন্যাটো প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সেই সুযোগ রাখা হয়েছে। এখনো ২০০১ সালে তথাকথিত নাইন ইলেভেন হামলার পর শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে। তবে সব সদস্যের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ‘আর্টিকেল ফাইভ’ কার্যকর করা সম্ভব। সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, তার দেশ ন্যাটোর প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করতে প্রস্তুত।

তবে চরম পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ঠাণ্ডা মাথায় গোটা বিষয়টি ভেবে দেখতে ন্যাটো সনদে ‘আর্টিকেল ফোর’-এর আওতায় এক প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা রাখা আছে। সেই ধারা অনুযায়ী কোনো সদস্য দেশ যদি নিজস্ব এলাকার অখণ্ডতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা বা নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করে, তখন বাকি সব সদস্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পোল্যান্ড সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে।

সর্বশেষ খবর