যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে সব ধরনের শুল্ক মওকুফ করে বাণিজ্যের প্রস্তাব সরাসরি অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক বিবৃতিতে জানান, বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং কোনো সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়, ততক্ষণ মন্তব্য করা সময়ের আগেই রায় দিয়ে দেওয়ার মতো হবে।’ এর আগে কাতারের দোহায় এক বৈঠকে ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত একটি এমন চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে যেখানে কার্যত কোনো শুল্ক থাকবে না। ট্রাম্প ওই সময় অ্যাপল সিইও টিম কুককে বলেন, তিনি চান না আইফোন ভারতে তৈরি হোক, কারণ ভারতের শুল্ক বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে একটি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, যা শুরু হয় ২০২৪ সালের এপ্রিলে। ওই সময় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ৯০ দিনের জন্য উচ্চ শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখেন। এই সময়ের মধ্যেই নয়াদিল্লি চুক্তি করার জন্য আলোচনায় বসে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ৯ জুলাই। এর মধ্যেই চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানোর বিষয়ে একমত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের চীনা পণ্যে শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে এবং চীনের আরোপিত শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামানো হচ্ছে। ভারত এরই মধ্যে কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়েছে, যেমন বার্বন হুইস্কি ও বড় মোটরসাইকেল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি এখনো প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা ট্রাম্প কমিয়ে আনতে চান। ভারতীয় বাণিজ্য বিশ্লেষক অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রও শুল্ক প্রত্যাহারে রাজি হয়, তাহলে ভারত তাদের ৯০ শতাংশ পণ্যে শুল্ক শূন্য করতে পারে।’ -বিবিসি
তবে অটোমোবাইল ও কৃষিপণ্যের মতো স্পর্শকাতর খাতে ভারত এখনো ছাড় দিতে রাজি নয়। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি করেছে, যেখানে হুইস্কি ও গাড়ির ওপর শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (ইফটা)-এর সঙ্গে দীর্ঘ ১৬ বছর পর একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও একটি চুক্তি করার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। -বিবিসি