ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় একটি স্কুলে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সময় গতকাল রাতে চালানো এ হামলায় রেডক্রসের দুই কর্মী, এক সাংবাদিক ও বেশ কয়েকটি শিশুও রয়েছে। এদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়ায় এক বাড়িতে পৃথক বিমান হামলায় আরও অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। এ দুটি হামলায় মোট ৫৪ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি ও আলজাজিরা।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে আগুন ধরে যায়। পরে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
স্কুলটিতে গাজার অনেক বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। টেলিগ্রামে হালনাগাদ পোস্টে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, হামলার পর তাদের উদ্ধারকর্মীরা স্কুলটি থেকে অন্তত ৩৫ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। ইসরায়েলি হামলায় স্কুল ভবনের প্রায় অর্ধেকই ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে অনেকে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজার প্রায় ৫৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫০০ শিশু। আহত হয়েছে আরও প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার। এদিকে, রবিবার স্পেনের মাদ্রিদ শহরে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল রাষ্ট্র সমাধানের জন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ২০টি ইউরোপীয় ও আরব দেশের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিকরা গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাবে হামাস রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেছিলেন, হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতি হবে। এ সময়ের মধ্যে হামাস ১০ জীবিত ও কিছু মৃত জিম্মিকে মুক্তি দেবে। তবে মার্কিন এক কর্মকর্তা আলজাজিরাকে বলেছেন, হামাস তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা মার্কিন প্রস্তাবে হামাসের রাজি হওয়ার যে তথ্য জানিয়েছেন সেটি সঠিক নয়। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকোফ বলেছেন, হামাস এখনো তার দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়নি। হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করতে কয়েক মাস ধরে কাজ করছেন ট্রাম্পের এ দূত। তবে তিনি এখনো আলোর মুখ দেখেননি। যদিও খবর ছড়ায় দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, এখন যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেটি চুক্তি হলে হামাস মোট জীবিত জিম্মির অর্ধেককে মুক্তি ও মোট মৃত জিম্মির অর্ধেকের লাশ ফেরত দেবে। আর এমন যুদ্ধবিরতি হলে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দুয়ার খুলবে। গাজায় যুদ্ধবিরতি হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে আছেন যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি হুমকি দিয়েছেন, ইসরায়েল পুরো গাজা দখল করবে এবং কোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে না।