১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০৮:৩৬

কোরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব

মুফতি মাহমুদুল হক জালীস


কোরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব

কোরআন মানুষের মুক্তির পথ। আলোর দিশারি। সফলতালাভের মাধ্যম। এজন্য মুসলমানদের উচিত কোরআনের যথাযথ তিলাওয়াত করা। তার দেখানো পথে নিজেদের জীবন পরিচালনা করা। কোরআনের ওপর ইমান আনা। বেশি বেশি কোরআনের তিলাওয়াত করা। অর্থ জানা ও বোঝার চেষ্টা করা। বিশেষ করে নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের করণীয়-বর্জনীয় কাজ সম্পর্কে কোরআনের নির্দেশনা জানা। তদনুসারে আমল করা। সঙ্গে সঙ্গে কোরআনের সত্য ও সুন্দরের পয়গাম মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এটা কোরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। যারা কোরআনের এ বিষয়গুলো ভালোভাবে মনে-প্রাণে মেনে চলবে তারাই মূলত কোরআনের বিশ্বাসী। কোরআনের প্রকৃত অনুসারী। আর যারা মুসলিম হয়েও কোরআনকে এভাবে বিশ্বাস করে না, সব কাজ মেনে চলে না তারা পার্থিব জীবনের রীতি ও পরিচিতি অনুযায়ী মুসলিম হলেও আল্লাহর কাছে মুসলিম নয়। বাস্তবে ইসলামের অনুসারী নয়। শুধুই মুখে মুখে মুসলমান। আবার সমাজে এমন কিছু মুসলিম আছে যারা কোরআনকে সম্মানের চোখে দেখে। পবিত্র কিতাব মনে করে। কিন্তু সন্দেহও পোষণ করে। মনে করে কোরআনের এত বিধিনিষেধ মেনে চললে পার্থিব জীবনে সুখ-শান্তি অর্জন হবে কিনা। আনন্দ-ফূর্তি করা যাবে কিনা। এরা মূলত কোরআনকে সম্মান দেখানোর পরও কোরআনের প্রতি যথাযথ ইমান না থাকার কারণে তাদের কোরআনের প্রতি বিশ্বাসী বলা যাবে না। কারণ কোরআনের প্রতি পরিপূর্ণভাবে ইমান আনলে সে কোরআনই আমাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। এজন্য কোরআনের প্রতি ইমানের হক আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে তা তিলাওয়াতের, অনুধাবনের, অনুসরণের, প্রচারের হকগুলোর প্রতি আমাদের সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। মনোযোগী হতে হবে। কারণ একমাত্র কোরআনের হক আদায়ের মাধ্যমেই ইহকাল-পরকালের সফলতা ও মুক্তি অর্জন সম্ভব। তাই কোরআনের হক আদায়ের জন্য আমাদের কিছু কাজ করা দরকার। কাজগুলো হলো- কোরআন মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করা। কেউ কোরআন তিলাওয়াত করলে অমনোযোগী না হওয়া। চুপ থেকে শ্রবণ করা। এ মর্মে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাকো, যাতে তোমাদের ওপর রহমত হয়।’ সুরা আল আরাফ, আয়াত ২০৪। শুদ্ধভাবে কোরআন তিলাওয়াত করা। যথাযথ নিয়মে পড়া। অশুদ্ধতা পরিহার করা। এ প্রসঙ্গে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি যাদের গ্রন্থ দান করেছি তারা তা যথাযথভাবে পাঠ করে। তারাই তার প্রতি বিশ্বাস করে। আর যারা তা অবিশ্বাস করে তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।’ সুরা বাকারা, আয়াত ১২১। কোরআন মুখস্থ করা। সব না পারলেও জায়গা-বিশেষ মুখস্থ করা। কোরআনে এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘বরং যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে এটা (কোরআন) তো স্পষ্ট আয়াত। কেবল বেইনসাফরাই আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে।’ সুরা আনকাবুত, আয়াত ৪৯।

কোরআনের আয়াত নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা। গবেষণা করা। তার গভীরতা অনুধাবনের চেষ্টা করা। এ বিষয়ে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানরা যেন তা অনুধাবন করে।’ সুরা সোয়াদ, আয়াত ২৯।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর