১৬ আগস্ট, ২০২২ ০৮:০৬

মৃতদের জন্য জীবিতদের করণীয়

মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা

মৃতদের জন্য জীবিতদের করণীয়

মৃতদের জন্য আমাদের অনেক কিছু করার আছে। যেগুলোর মাধ্যমে মহান আল্লাহ চাইলে তাদের ক্ষমা করে দিতে পারেন। তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারেন। এবং তাদের সওয়াবের পাল্লা ভারী করে দিতে পারেন। 

নিম্নে এমনই কিছু আমল তুলে ধরা হলো—

দোয়া : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো লোক মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিন প্রকার আমল (জারি থাকে)। (প্রথম) সদকায়ে জারিয়া (চলমান সদকা); (দ্বিতীয়) ওই ইলম, যা দ্বারা অন্য লোক উপকৃত হয়; (তৃতীয়) নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। ’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩৬৫১)

এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, মৃতদের জন্য আমরা খুব বেশি বেশি দোয়া করতে পারি। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন।

কোরআন তিলাওয়াত : মাকিল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের মৃতদের জন্য সুরা ইয়াসিন পাঠ করো। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩১২১)

অতএব নিজের মৃত আত্মীয়দের ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোরআন তিলাওয়াত করা যেতে পারে। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে কাউকে দিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করানো উচিত নয়।

রোজা : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কেউ রোজা না রেখে মারা গেলে তার অভিভাবক যেন তার পক্ষ থেকে রোজা রাখে। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫২)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করেছে, আমার মা মারা গেছেন, কিন্তু তাঁর এক মাসের রোজা বাকি ছিল। আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে কাজা করতে পারব? তিনি বলেন, হ্যাঁ। আল্লাহর ঋণই অধিকতর পরিশোধযোগ্য। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৩)

সদকা : মৃতদের ইসালে সওয়াব করার একটি উত্তম পদ্ধতি হতে পারে সদকা। কারো সামর্থ্য থাকলে দান-সদকার মাধ্যমে মৃত আত্মীয়দের ইসালে সওয়াব করা যেতে পারে।

হজ : বুরায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এক নারী এসে জিজ্ঞেস করল, ...আমার মা হজ না করে ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব? তিনি বলেন, (হ্যাঁ), তুমি তার পক্ষ থেকে হজ করো। (তিরমিজি, হাদিস : ৯২৯)

এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, মানুষ চাইলে তাদের মৃত আত্মীয়দের ইসালে সওয়াবের নিয়তে হজ করতে পারবে। তা ছাড়া হজ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত, যা মৃত ব্যক্তির সওয়াবের পাল্লা অনেক বেশি ভারী করে দিতে পারে।

ওমরাহ : অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি আমল ওমরাহ। রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা হজ ও ওমরাহ ধারাবাহিকভাবে আদায় করতে থাকো। এ দুটো দারিদ্র্য ও গুনাহকে এমনভাবে দূর করে দেয় যেমন হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৮১০)

এ ছাড়া মিসকিনদের খাবার দেওয়া, নফল নামাজ পড়া, চিকিৎসাসেবাসহ যেকোনো সওয়াবের কাজ করেই মৃতদের জন্য ইসালে সওয়াব করার সুযোগ আছে। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, এতে যেন কোনো নাজায়েজ, বিদআত ও কুপ্রথার অনুপ্রবেশ না ঘটে। আল্লাহর আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর