যখন সূর্য বিদায় নেয়, তখন পৃথিবীটা রহস্যময় হয়ে ওঠে। ওই সময় মানুষ আড্ডা দিতে, প্রিয় মানুষদের সঙ্গে গল্প করতে পছন্দ করে। কিন্তু আসলে এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ; দোয়া কবুলের সময়। এই সময়টা আড্ডা, গল্প-গুজবে কাটানো উচিত নয়।
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! গত রাতে আমাকে একটা বিচ্ছু কামড় দেওয়ায় কী কষ্টটাই না পেয়েছি! তিনি বলেন, তুমি যদি সন্ধ্যাকালে বলতে—উচ্চারণ : ‘আউজু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্বা।’ অর্থ : আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার অসিলায় আমি তাঁর কাছে তাঁর সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই। তাহলে তোমার কোনো ক্ষতি হতো না। (মুসলিম, হাদিস : ২৭০৯)
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন রাতের আঁধার নেমে আসে অথবা যখন সন্ধ্যা হয় তখন তোমরা তোমাদের শিশুদের (বাইরে বের হওয়া থেকে) আটকিয়ে রাখবে।
কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। আর যখন রাতের কিছু অংশ অতিক্রান্ত হবে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পারো। আর বিসমিল্লাহ বলে তোমরা ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। (বুখারি, হাদিস : ৩৩০৪)
বুখারি শরিফের অন্য বর্ণনায় আছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা পাত্রগুলো ঢেকে রাখো, ঢাকার কিছু না পেলে কোনো কিছু আড়াআড়িভাবে হলেও পাত্রের ওপর রেখে দাও। মশকগুলোর মুখ বেঁধে রাখো, গৃহের দরজাগুলো বন্ধ রাখো। শোবার সময় বাতিগুলো নিভিয়ে দাও।’
বিশেষ করে শিশুদের সন্ধ্যার সময় ঘর থেকে বের হতে দেওয়া একবারেই উচিত নয়।
কারণ সন্ধ্যার পর যেসব জিন-শয়তান ঘুরাফেরা করে তাদের কুপ্রভাব শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি লাগে।
শিশুরা হলো জান্নাতের ফুল। ফুলের পাপড়ির মতো কোমল এদের দেহাবয়ব। এদের বিপদ-আপদ থেকে বাঁচিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। তিনি বলেন, ‘তোমরা রাতের সূচনায় (সন্ধ্যার শুরু থেকে) অন্ধকার দূর না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের শিশুদের সামলে রেখো। এই সময় শয়তানরা (চার দিকে মানুষের ক্ষতি ও অনিষ্টতায়) ছড়িয়ে পড়ে।’
(আল আদাবুল মুফরাদ)
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ