পৃথিবীর যত জঘন্য অপরাধ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো রাসুল (সা.)-এর সম্পর্কে মিথ্যারোপ করা। অর্থাৎ তিনি যা বলেননি, তা তাঁর নামে চালিয়ে দেওয়া কিংবা তাঁর সুস্পষ্ট নির্দেশ অস্বীকার করা।
রাসুল (সা.)-এর ওপর মিথ্যার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে— মুগিরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আমার ওপর মিথ্যারোপ অন্য কারো ওপর মিথ্যারোপের মতো নয়।
যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার নামে মিথ্যা বলবে, সে যেন জাহান্নামে নিজের জায়গা ঠিক করে নেয়।’ (বুখারি, হাদিস : ১২৯১)
অর্থাৎ রাসুল (সা.)-এর নামে মিথ্যা বলার শাস্তি জাহান্নাম। এটি এত বড় গুনাহ যে যারা তা করে, তারা আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত হয়। তাঁর শানের পরিপন্থী উক্তি করা কিংবা মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ভয়ংকর অপরাধ।
এ রকম একজন অভিশপ্ত মানুষের উদাহরণ পাওয়া যায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেই, নবীজির শানের পরিপন্থী উক্তি করায় যার লাশ কবর গ্রহণ করেনি।
এক ব্যক্তি কিছুদিন মুসলমান ছিল এবং সে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য অহি লিখত। পরে সে অমুসলিম হয়ে যায় এবং বলতে শুরু করে, ‘আমি মুহাম্মাদ (সা.)-কে যা লিখে দিতাম, তার চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানতেন না।’ (নাউজুবিল্লাহ)
এরপর তার পরিণতি সবাই দেখেছে।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : এক খ্রিস্টান ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেছিল এবং সুরা বাকারা ও সুরা আলে ইমরান মুখস্থ করেছিল। সে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য অহি লিখত। পরে সে আবার খ্রিস্টান হয়ে যায় এবং বলতে লাগল, ‘আমি মুহাম্মাদ (সা.)-কে যা লিখে দিতাম, তার চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানেন না (নাউজুবিল্লাহ)।’ কিছুদিন পর আল্লাহ তাকে মৃত্যু দেন। খ্রিস্টানরা তাকে দাফন করে।
কিন্তু পরদিন সকালে দেখা যায়, কবর তাকে মাটি থেকে বাইরে ফেলে দিয়েছে। খ্রিস্টানরা বলল, ‘এটা নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর সাহাবিদের কাজ। কারণ, আমাদের সঙ্গী তাঁদের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল।’ এরপর তারা গভীর করে কবর খুঁড়ে আবার দাফন করে। কিন্তু পরদিন একই ঘটনা ঘটে। তৃতীয়বারও গভীর কবর খুঁড়ে দাফন করা হয়, তবু কবর আবারও লাশ ফেলে দেয়। তখন তারা বুঝল, এটা মানুষের কাজ নয়। তাই তারা লাশটি ফেলে রাখল। (বুখারি, হাদিস : ৩৬১৭)
তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত, নিজের মনগড়া কথাগুলো ‘নবীজি বলেছেন’ বা ‘হাদিসে আছে’ বলে চালিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
বিডি প্রতিদিন/মুসা