কোরবানি ইসলামের অন্যতম আর্থিক ইবাদত। কোরবানি বিষয়ে পবিত্র কোরআনে সর্বমোট ছয় স্থানে আলোচনা করা হয়েছে।
নিম্নে আয়াতগুলো উল্লেখ করা হলো—
(১) কোরবানি প্রাচীনতম ইবাদত
পবিত্র কোরআনে এসেছে, “আপনি তাদের আদম (আ.)-এর দুই পুত্রের বাস্তব ঘটনা পাঠ করুন, যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তাদের একজনের কোরবানি হলো, অপরজনেরটি কবুল হলো না। সে বলল, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব।’ অন্যজন বলল, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকওয়াবানদের থেকেই কবুল করেন।’” (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২৭)
(২) সব ধর্মে কোরবানির বিধান
পবিত্র কোরআনে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি একটি কোরবানির পদ্ধতি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে সেই জীবজন্তুর ওপর, যা তিনি তাদের দিয়েছেন জীবিকাস্বরূপ, গবাদি পশু থেকে। আর তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ; অতএব, শুধু তাঁরই আনুগত্য করো। আর আপনি সুসংবাদ দিন বিনয়ী লোকদের।’
(সুরা : হজ, আয়াত : ৩৪)
(৩) সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য কোরবানি করা বাধ্যতামূলক
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব আপনার রবের জন্য সালাত আদায় করুন এবং কোরবানি করুন।’
(সুরা : কাউসার, আয়াত : ২)
(৪) আত্মসমর্পণ ও আনুগত্য কোরবানির প্রাণ
পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তিনি [ইবরাহিম (আ.)] বললেন, আমি আমার প্রতিপালকের দিকে যাচ্ছি; তিনিই আমাকে পথ দেখাবেন। হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এক সৎ সন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। অতঃপর যখন সে পিতাসহ চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলো, তখন তিনি বললেন, হে আমার প্রিয় সন্তান! আমি স্বপ্নে দেখছি যে আমি তোমাকে কোরবানি করছি; তুমি বলো, তোমার কী মত? সে বলল, হে আমার প্রিয় পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন, তাই করুন; ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে সবরকারীদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন। যখন তারা উভয়ে আত্মসমর্পণ করল এবং তিনি তাকে কাত করে শুইয়ে দিলেন, তখন আমি তাকে ডেকে বললাম, হে ইবরাহিম। তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ; নিশ্চয়ই আমি এভাবেই সৎকর্মপরায়ণদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এটি ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আর আমি তার পরিবর্তে দিলাম এক মহান কোরবানি।’
(সুরা : আস সাফাত, আয়াত : ৯৯-১০৭)
(৫) কোরবানিতে নিয়তের বিশুদ্ধতা জরুরি
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলে দাও, নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু—সব কিছুই আল্লাহর জন্য, যিনি সব জগতের প্রতিপালক।’
(সুরা : আল-আনআম, আয়াত : ১৬২)
(৬) কোরবানিতে আল্লাহভীতিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছে না এগুলোর গোশত বা রক্ত, বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।’
(সুরা : হজ, আয়াত : ৩৭)