কোরবানির পশুর গোশত নিজে খাবে, নিজের পরিবারকে খাওয়াবে, আত্মীয়-স্বজনকে হাদিয়ে দেবে এবং গরিব-মিসকিনকে সাদাকা করবে। গোশত বিতরণের মুস্তাহাব পদ্ধতি হলো তিন ভাগ করে এক ভাগ পরিবার-পরিজনের জন্য রাখবে এবং বাকি দুই ভাগের এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবকে আর এক ভাগ গরিব-মিসকিনকে বণ্টন করে দেবে। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ১/৪৭৩)
কয়েক ব্যক্তি একসঙ্গে শরিক হয়ে যদি একটি পশু কোরবানি করে, তবে পাল্লা দিয়ে মেপে সমানভাবে গোশত বণ্টন করে নেবে। অনুমান করে বণ্টন করা জায়েজ নয়।
কেননা ভাগে কমবেশি হলে তা সুদ বলে গণ্য হবে। অবশ্য যদি গোশতের সঙ্গে মাথা, পায়া এবং চামড়াও ভাগ করে দেয়, তবে যে ভাগে মাথা, পায়া ও চামড়া থাকবে সে ভাগে যদি গোশত কম হয়, তবে এই বণ্টন শুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু যে ভাগে গোশত বেশি সেই ভাগে মাথা, পায়া বা চামড়া দিলে বণ্টন শুদ্ধ হবে না, সুদ হবে এবং গুনাহগার হতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ২/২৩২)
কোরবানির গোশত অমুসলিমকেও দেওয়া বৈধ। কিন্তু মজুরি বাবদ দেওয়া বৈধ নয়। অবশ্য মুসলিমদের দেওয়াই উত্তম। কসাইকে গোশত বানানোর মজুরি হিসেবে গোশত, চামড়া, রশি ইত্যাদি দেওয়া বৈধ নয়। পারিশ্রমিক দিতে হলে তা ভিন্নভাবে আদায় করবে। ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩০)
কোরবানির গোশত কোরবানিদাতার জন্য বিক্রি করা মাকরুহ তাহরিমি। যদি কেউ বিক্রি করে তাহলে এর মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/৪৭৭)
কোরবানির গোশত তিন দিনের বেশি সময় জমিয়ে রাখাও জায়েজ এবং কোরবানির পশুর রশিও সদকা করা মুস্তাহাব। (হিদায়া : ৪/৪৫০; মাসায়িলে ঈদাইন, পৃষ্ঠা-১৮৪)
শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ পশুর কিছু অংশ ফেলে দিতে বলা হয়েছে— যা খাওয়া নিষিদ্ধ। তা হলো, ১. প্রবাহিত রক্ত, ২. অণ্ডকোষ, ৩. চামড়া ও গোশতের মধ্যে সৃষ্ট জমাট মাংসগ্রন্থি, ৪. মূত্রথলি, ৫. পিত্ত, ৬ ও ৭. নর ও মাদির যৌনাঙ্গ।
হাদিসে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বকরির সাতটি জিনিস অপছন্দ করেছেন : পিত্ত, মূত্রথলি, মাংসগ্রন্থি, নর ও মাদির যৌনাঙ্গ, অণ্ডকোষ, (প্রবাহিত) রক্ত।’ (কিতাবুল আসার, হাদিস : ৮০৮)
বিডি প্রতিদিন/কেএ