শিরোনাম
২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ১৭:৪৫

চিড়া খাওয়া দেখেই বাংলাদেশি বলে সন্দেহ বিজেপি নেতার!

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

চিড়া খাওয়া দেখেই বাংলাদেশি বলে সন্দেহ বিজেপি নেতার!

কয়েকদিন আগেই দিল্লির রামলীলা ময়দানে থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পোশাক দেখলেই চেনা যায় কারা সহিংসতা সৃষ্টি করছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকে (এনআরসি) কেন্দ্র করে গোটা ভারতজুড়ে সহিংসতার ঘটনায় ওই মন্তব্য করেছিলেন মোদি। 

'পোশাক' নিয়ে মোদির ওই মন্তব্য ঘিরে সেসময় বিতর্ক কম হয়নি। মোদির পর এবার তারই দলের এক প্রভাবশালী নেতা বললেন, খাওয়া দেখে চেনা যায় যে কারা বাংলাদেশি। নিজের বাড়িতে নির্মাণাধীন শ্রমিকদের চিড়া খাবারের অভ্যাস দেখে ওই মন্তব্য করেন বিজয়বর্গীয়। 

বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের ইনদোরে সিএএ-এর সমর্থনে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে বিজেপি নেতা এবং দলটির অন্যতম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেই তার বাড়িতে একটি নতুন ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। সে সময় নির্মাণ করতে আসা শ্রমিকদের অনেকেই চিড়া খাচ্ছিলেন। এরপর শ্রমিকদের নিয়োগকারী সুপারভাইজার ও কনট্রাক্টরের সঙ্গে কথা বলে তার সন্দেহ হয় ওই শ্রমিকরা বাংলাদেশি নাগরিক।

পরে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা তাকে প্রশ্ন করলে বিজয়বর্গীয় জানান, "আমার মনে হয়েছিল ওই শ্রমিকরা বাংলাদেশের নাগরিক। দুদিন পর এই বিষয়ে আমার মনে সন্দেহ জাগে। এরপর তারা আমার বাড়িতে কাজ বন্ধ করে দেয়। আমি যদিও পুলিশে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ জানাইনি। আমি কেবল মানুষকে সতর্ক করতেই এটা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলাম।" 

বিজেপি নেতার এই মন্তব্যের পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ঘিরে ট্রোল শুরু হয়েছে। কেউ লিখেছেন, সস্তার কারণেই দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিকদের মত মানুষরা চিড়া খেয়ে থাকেন, কারণ বেশি দাম দিয়ে খাওয়ার মত অর্থ তাদের নেই।  

একজন লিখেছেন কিভাবে বহু ভারতবাসীর কাছেই তাদের নাস্তায় চিড়া অত্যন্ত প্রধান একটি খাবার হয়ে উঠেছে বা অনেকেই এটিকে বেশ পছন্দ করছেন তা তুলে ধরেছেন। 

বিজয়বর্গীয়কে কটাক্ষ করে কাজল শ্রীনিবাসন বলে এক নারী টুইট করে লিখেছেন, "আমার বাড়ির ধোপা বার্গার খায়। আমার মনে হয় তিনি আমেরিকান।"  

তেজু নামে আরও এক নারী লিখেছেন, 'চিড়া খাওয়াটাই যদি অন্যতম শর্ত হয়ে থাকে তবে আমি বলব, আমার বাবা প্রতিদিন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী।" 

পাঞ্জাবের বাসিন্দা স্বপ্না মদন লিখেছেন, "আমি একজন পাঞ্জাবি। আমি এখন চিড়া খাচ্ছি। চিড়ার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই।" 

টুইট করে অঙ্কিতা রায় লিখেছেন, "প্রথমে গোমাংস খাওয়া ব্যক্তিরা ছিলেন রাষ্ট্রবিরোধী। এবার চিড়া খাওয়া ব্যক্তিরাও রাষ্ট্রবিরোধী হয়ে গেলেন। বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মতে আপনি যদি চিড়া খান তবে আপনি নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশি। গরীব দৈনিক শ্রমিকরা কেবল চিড়া খায় বলে তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন এই বিজেপি নেতা। সত্যিই!"

সিএএ নিয়ে তার মন্তব্য, আপনারা গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। দেশের স্বার্থে এই সিএএ আনা হয়েছে। যারা প্রকৃত শরণার্থী তাদের নিশ্চিত বাসস্থানের সংস্থান করবে এই আইন। আর যারা দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি সেইসব অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করবে।" 


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর