২২ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:৪১

পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার থেকে উধাও ‘ই- অরেঞ্জে’র সোহেল রানা!

দীপক দবনাথ, কলকাতা

পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার থেকে উধাও ‘ই- অরেঞ্জে’র সোহেল রানা!

সোহেল রানা। ফাইল ছবি

ভারতে জামিন পেয়েই নিরুদ্দেশ দেশটিতে আটক বাংলাদেশের বনানী থানার সাবেক পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা। সীমান্ত পেরিয়ে তিনি ফের বাংলাদেশ বা অন্য কোনও দেশে চলে গেছে কি না তারও কোনও প্রকৃত তথ্য নেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের কাছে। 

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে বাংলাদেশ পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এরপর স্থানীয় মেখলিগঞ্জ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় রানাকে। ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে বাংলাদেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই- অরেঞ্জে’র মালিক সানিয়া মেহজাবীনের আপন ভাই ও ওই প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক সোহেল রানার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট-এর ১৪/এ, ১৪/সি-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।

সোহেল রানা ছাড়াও আরও একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। 

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া জেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ৪৬ বছর বয়সী সোহেল রানার আটকের সময় তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় একাধিক ব্যাংক ডেবিট কার্ড মার্কিন ডলার, ইউরোও বাংলাদেশি মোবাইল সিম, মোবাইল ফোন এবং বেশ কিছু ওষুধ। 

প্রাথমিকভাবে সেসময় বিএসএফ জানায়, সোহেল রানার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারত হয়ে নেপালের কাঠমান্ডু পাড়ি দেওয়া। আর অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশের জন্য সেসময় মেখলিগঞ্জের ভারতীয় এক দালাল সুবোধ রায়কে ১০ হাজার বাংলাদেশি টাকাও দিয়েছিল সোহেল। 

পরে সোহেল রানাকে কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। এরপর বেশ কয়েক দফায় পুলিশ রিমান্ড এবং জেল রিমান্ড হয়। পরে তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া।

২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত বিচার বিভাগীয় বিচারক। 

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর তাকে জামিন দেয় জলপাইগুড়িতে অবস্থিত কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ। আদালতে জামিনের আবেদন মঞ্জুরের সময় সোহেল রানার ব্যক্তিগত জামিনদার জানান, সপ্তাহে একবার করে তিনি মেখলিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অফিস ইনচার্জ) এর সাথে দেখা করবেন এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া মেখলিগঞ্জ ছেড়ে বাইরে যাবেন না। কিন্তু জামিন পাওয়ার পরই তিনি সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাথে তিনি দেখা করেননি। পরিবর্তে মেখলিগঞ্জ থানাকে একটি ইমেইল করে সোহেল রানার জানান তার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত জটিল, তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভালো হাসপাতালে চিকিৎসা করা দরকার। এর স্বপক্ষে তিনি মেখলিগঞ্জ এর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাকালীন সময়ের যাবতীয় নথি ও তথ্য ইমেল করে মেখলিগঞ্জ থানার কাছে পাঠিয়ে দেন। 

এই বিস্তারিত তথ্য মেখলিগঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আরও বলা হয় যে, বর্তমানে সোহেল রানা কোথায় অবস্থান করছেন তিনি তিনি পুলিশকে জানাননি।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর