২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৪:২১

গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে : সোনিয়া গান্ধী

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে : সোনিয়া গান্ধী

সোনিয়া গান্ধী

ভারতের সংসদে চলমান শীতকালীন অধিবেশনে ১৪১ জন বিরোধী সাংসদকে বহিষ্কার করার বিষয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা করেছেন দেশটির কংগ্রেস সাংসদ ও ‌‘কংগ্রেস পার্লামেন্টারি পার্টি’র (সিপিপি) চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী।

বুধবার দিল্লিতে সংসদের সেন্ট্রাল হলে সিসিপির বৈঠকে সরকারের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘এই (নরেন্দ্র মোদি) সরকার গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে। এর আগে কখনো এত বিরোধী সাংসদকে হাউস (লোকসভা ও রাজ্যসভা) থেকে বরখাস্ত করা হয়নি এবং সেটাও কেবলমাত্র একটি সম্পূর্ণ যুক্তিসঙ্গত এবং ন্যায্য দাবি উত্থাপনের জন্য।’

গত ১৩ ডিসেম্বর সংসদে রংবোমা হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সংসদীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছ থেকে বিবৃতি চাওয়ার জন্য বিরোধী সাংসদরা যে দাবি জানিয়ে আসছে, সেই দাবিকে সমর্থন করে সোনিয়া বলেন, ‘বিরোধী সাংসদরা যা চেয়েছিল তা হলো ১৩ ডিসেম্বরের নজিরবিহীন ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিবৃতি দিক।’

এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের প্রতিক্রিয়াকে ‌‘অহংকারী’ বলে অভিহিত করে উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলীর কংগ্রেস সাংসদ সোনিয়া গান্ধী আরও বলেন, বিরোধীদের এই দাবির পর সরকার পক্ষের তরফে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে, তা বর্ণনা করার মতো কোনো ভাষা নেই। ১৩ ডিসেম্বর যা ঘটেছিল, তা অমার্জনীয় এবং এটা কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। ঘটনার চার দিন পর এই ঘটনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী তার মতামত প্রকাশ করেন ও জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন এবং সেটাও তিনি সংসদের বাইরে করেছিলেন। আর এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে সংসদের (লোকসভা) মর্যাদার প্রতি তার ঘৃণা এবং আমাদের দেশের জনগণের প্রতি তার অবজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

দলের সাংসদদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সোনিয়া আরও জানান, ‘আমি এটা আপনাদের উপর ছেড়ে দিচ্ছি যে বিজেপি আজ বিরোধী দলে থাকলে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাত, তা আপনারাই কল্পনা করে দেখুন।’

এদিনের বৈঠক থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়েও নিজের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন সোনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, জম্মু কাশ্মীরকে অবিলম্বে তার রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনও করতে হবে।

চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই পাস হয় ‘জম্মু ও  কাশ্মীর (সংশোধনী) সংরক্ষণ বিল’ এবং ‘জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল-২০২৩’- দুইটি বিল। এই বিল পাস করার সময় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সমস্যা তৈরির জন্য ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকেই দায়ী করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘নেহেরু মূলত দুইটি ভুল করেছিলেন-একটি যুদ্ধ বিরোধী ঘোষণা করা, দ্বিতীয়ত কাশ্মীর ইসুকে জাতিসংঘে নিয়ে যাওয়া।’

সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে সোনিয়া গান্ধী এদিন বিজেপিকে নিশানা করে তাদের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃত করা ও জওহরলাল নেহরুর মতো মহান দেশপ্রেমিকদের বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ তোলেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর