শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় ইউএনওর নির্দেশে দুই শিক্ষার্থীর মাথা ন্যাড়া

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে দুই স্কুলছাত্রের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হলো। এতে তারা লোক লজ্জায় ঘর থেকে বের হতে পারছে না। বুধবার রাত ৯টার দিকে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমুল হক পাভেলের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, দৌলতপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কৌশিক আহমেদ রাসেল ও লিমন কিছুদিন আগে স্কুল ড্রেস ছাড়া ক্লাসে আসায় শ্রেণি শিক্ষক তাদের দাঁড় করিয়ে রাখেন। এতে ওই শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে মারার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী রাসেল ও লিমন বুধবার স্কুলে আসার সময় ব্যাগে চাকু নিয়ে আসে। শিক্ষকরা বিষয়টি অাঁচ করতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পরে বেলা ২টার দিকে পুলিশ এসে দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিকাল ৪টার দিকে তাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টা পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়। এরই মধ্যে রাসেল ও লিমনের অভিভাবকদের জানালে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমুল হক পাভেল ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুই শিক্ষার্থীর ২০০ টাকা করে জরিমানা করেন। পরে তিনি নাপিত ডেকে দুই শিক্ষার্থীর মাথা ন্যাড়া করে দেন। এদিকে, রাসেলের বাবা উপজেলার হরিণগাছি গ্রামের বাসিন্দা হবিবর রহমান হবি জানান, তার ছেলে নির্দোষ, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। শিক্ষক আমজাদ হোসেন বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তার ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। চাকু নিয়ে স্কুলে যাওয়ার বিষয়টি সাজানো। নির্যাতনের শিকার অপর শিক্ষার্থী লিমনের বাবা উপজেলার ভেড়ামারা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ পুলিশে চাকরি করায় এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে দৌলতপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরাত আলী দাবি করেন, লিমন ও রাসেলের স্কুল ব্যাগ থেকে চাকু পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমুল হক পাভেল প্রথমে মাথা ন্যাড়া করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে ঘটনাটি স্বীকার করলেও, তার কথায় নয়, দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরাই মাথা ন্যাড়া করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি কেবল দুই শিক্ষার্থীর জরিমানা করেছেন। তবে রাসেলের বাবা হবিবর রহমান হবি জানান, ইউএনও সাহেবই মাথা ন্যাড়া করার নির্দেশে দেন। তিনি এ ঘটনার বিচারও দাবি করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর