শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ বললেন

সারদার রুপি জামায়াতকে পাচার করেছিলেন মমতা

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা এবং ২০১৪ সালে ভারতের লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়লাভ নিশ্চিত করতেই ভুঁইফোড় অর্থলগ্নিকারী সংস্থা সারদার রুপি বেআইনিভাবে বাংলাদেশের একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠনের (জামায়াত) কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এমন অভিযোগ করেছেন বিজেপির মুখপাত্র তথা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিং। গতকাল বিকালে কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে সারদার রুপি বাংলাদেশে পাচারের জন্য মমতাকে সরাসরি আক্রমণ করেন তিনি। সিদ্ধার্থনাথ সিং বলেন, মমতার বিরুদ্ধে সারদার অর্থ পাচারসংক্রান্ত সব খবরই বাংলাদেশের জাতীয় সংবাদপত্রে ফলাও করে ছাপা হয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত সেই খবরের বেশকিছু কাটিং সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১০ সালে ভারতের রেলমন্ত্রী থাকাকালেই সারদার সঙ্গে পরিচয় গড়ে ওঠে মমতার। তার আমলেই সারদার অর্থ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের মৌলবাদী সংগঠনটির কাছে পৌঁছে যায়। আর এ কাজে সাহায্য করেছিলেন তারই দলের সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান। বিজেপি নেতার অভিযোগ নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (সিমি) একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এই ইমরান। ইমরানের সঙ্গে এই অর্থ পাচারে জামায়াতে ইসলামীর নেতা দিলাবর হুসেন এবং মীর কাসিম আলীও জড়িত আছেন বলে অভিযোগ করেন সিদ্ধার্থনাথ সিং। তার অভিযোগ, এ অর্থ পাচারের মধ্য দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন এবং দেশবিরোধী সংগঠনগুলোকে নাশকতা করতে মনোবল জোগাচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের কাটিং তুলে ধরে তার অভিযোগ, ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলকে জেতাতেই সারদার রুপি জামায়াতকে জোগান দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে ২৭ শতাংশ মুসলিমের বসবাস। নির্বাচনে ওই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে মমতার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে না নেয় সে কারণেই এ অর্থ পাচার করা হয়েছিল। তিনি বলেন, দিল্লিতে এনডিএ সরকারের আমলে তেহেলকা কেলেঙ্কারি সামনে আসায় নৈতিকতার প্রশ্নে এনডিএ সরকার থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মমতা, কিন্তু সারদার মতো এত বড় অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতার নাম জড়িয়ে পড়ার পরও কেন তিনি এখনো পদ আঁকড়ে ধরে আছেন?
পত্রিকায় প্রকাশিত সারদার খবর নিয়ে সিদ্ধার্থনাথ সিংয়ের প্রশ্ন- মমতার বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ ওঠার পরও তিনি কেন চুপ করে বসে আছেন? কেন তিনি মানহানির মামলা দায়ের করছেন না? তার অভিযোগ, মমতার নীরবতাই প্রমাণ করে দিচ্ছে যে, সারদার রুপি পাচারের ঘটনায় কিছু একটা ঘটেছিল? এ ঘটনার দায় নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ করা উচিত বলেও মনে করেন এই বিজেপি নেতা।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ও ইডিরও ধারণা, সারদা বাজার থেকে যে রুপি তুলেছিল তার একটা অংশ বাংলাদেশে গিয়ে থাকতে পারে। সেবি ও কোম্পানি আইনের বেশকিছু ধারা ভঙ্গ করে সারদা বেআইনিভাবে রুপি তুলেছে এবং তা পাচার করা হয়েছে বাংলাদেশে। আর এ রুপি পাচারের সঙ্গে যুক্ত তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান। বস্তায় ভরে কলকাতার সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিস থেকে ওই রুপি অ্যাম্বুলেন্সে করে যেত সীমান্তে তারপর সীমান্ত লাগোয়া বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র থেকে বিনিময় করে সীমান্ত পার করা হতো। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন নিজেও জেরায় সিবিআইকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত তৃণমূলের সাংসদ ইমরানকে কয়েক দফায় আলাদা জেরা করেছে সিবিআই ও ইডি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর