শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

জাতিসংঘে যাচ্ছে দশম সংসদ নির্বাচনের সহিংসতা প্রতিবেদন

দশম সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ও নির্বাচনী সহিংসতার বিষয় জাতিসংঘে উপস্থাপনের জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রতিবেদনে বিরোধী দল ছাড়া দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাখ্যা ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও উপস্থাপন করা হচ্ছে। অন্যদিকে ১৯৯৬ সালের বিএনপি আমলের একতরফা নির্বাচন ও বর্তমান সরকারের দশম সংসদ নির্বাচনের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচিত সরকারের আমলে ভোট গ্রহণ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের সুবিধা-অসুবিধাও প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকছে। একই সঙ্গে প্রতিবেদনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সহিংসতায় আহত-নিহতদের পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হবে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে নির্বাচন কমিশনের এক উপসচিবকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। জানা গেছে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের এসব বিষয় উপস্থাপন করতে পারেন। এ জন্য নির্বাচন কমিশন ’৯৬ থেকে ২০১৪ সালের বিভিন্ন নির্বাচনের তুলনামূলক প্রতিবেদন তৈরি করছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, প্রতিবেদনে সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ও বিরোধী দলের নির্বাচনের সহিংসতার বিষয়টি স্থান পাচ্ছে। এমনকি নির্বাচনের আগের রাতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আগুন দেওয়ার ঘটনাসহ সব সহিংসতার ঘটনা প্রতিবেদনে স্থান পাবে। অন্যদিকে ১৯৯৬ সালের বিএনপি আমলের একতরফা নির্বাচন ও বর্তমান সরকারের সময়ের দশম সংসদ নির্বাচনের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুবিধা-অসুবিধাগুলোও উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের কর্মকাণ্ড, ব্যালট জ্বালাও-পোড়াও, কেন্দ্র দখলসহ সব সহিংসতার পরিসংখ্যানও দেওয়া হবে প্রতিবেদনে।
অন্যদিকে ’৯৬ সালের বিএনপির একতরফা নির্বাচন থেকে শুরু করে বর্তমান সরকারের আমলের বিরোধী দল ছাড়া দশম সংসদ নির্বাচনসহ ’৯৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের সব নির্বাচনের খুঁটিনাটি বিষয় উপস্থাপন করা হবে। ’৯৬ সালের একতরফা নির্বাচনে বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অবস্থান ও দশম সংসদ নির্বাচনের সময় বিরোধী হিসেবে বিএনপির কর্মকাণ্ডও প্রতিবেদনে স্থান পাবে। বিরোধী দল ছাড়া দশম সংসদ নির্বাচনের অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপটে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হবে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির আমলে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ৪৭ জন এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু দশম সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ জন এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে বিএনপি-জামায়াত জোট ও সমমনাদের নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণার মধ্য দিয়ে ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন হয়। দেশের ১৫৩ আসনে একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় বাকি ১৪৭ আসনে ভোট হয়। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চলে ভোটের আগে থেকে। নির্বাচনের দিনই সহিংসতায় মারা যান ২১ জন। এ সময় নির্বাচনসামগ্রীতে অগ্নিসংযোগ, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের মারধর, পাঁচ শতাধিক কেন্দ্রভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ভোট গ্রহণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্রায় তিনশ’ জন হতাহত হয়। ইসি কর্মকর্তারা জানান, পুলিশের ১০৮ জন, সশস্ত্র বাহিনীর ২২ জন ও বিজিবির ৫৫ জন আহত সদস্যের নাম পাওয়া গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর