সোমবার, ১৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

সেবাহীন করের বোঝা বাড়বে

সেবাহীন করের বোঝা বাড়বে

সালেহউদ্দিন আহমেদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের কর ব্যবস্থায় বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। একদিকে সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী, অন্যদিকে আবার সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। এটা বৈপরীত্য নীতি। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ই-টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি সবাইকে করের আওতায় আনতে চাইছেন। অথচ সেবা কিন্তু বাড়ছে না। যেমন পরিবহন খাত, স্বাস্থ্যসেবা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা কোনোটাই তো ঠিকমতো সেবা দিতে পারছে না। ফলে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়িত হলে সেবাহীন করের বোঝা বাড়বে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে। গতকাল তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ ক্ষেত্রে সকারের উচিত, যাদের টিআইএন আছে তাদের রিটার্ন জমা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি যারা কর ফাঁকি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অথচ এ বাজেটে সাধারণ মানুষের ঘাড়েই করের বোঝাটা বেশি চাপানো হয়েছে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ও বাজেট সিস্টেমে ধনীরাই ধনী হয়। আর গরিবরা হয় হতদরিদ্র। এর ফলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখছেন তা বাস্তবে সম্ভব নয়। এ ছাড়া দেশের বাজেটরি সিস্টেমকে জাতীয় বাজেট না বলে বাৎসরিক অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশের দলিল বলাই ভালো বলে তিনি মনে করেন। ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘শুধু এনবিআর-নির্ভর বাজেট থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। অবশ্য এ বছর তো আর বেরিয়ে আসা সম্ভব না। এ জন্য ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে হবে বাজেটের ধরন বদলানোর। শুধু জনসাধারণের ওপর কর না বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর অন্য উপায় খুঁজতে হবে। সহজেই রাজস্ব আদায় বাড়াতে মোবাইল ফোনের সেবার ওপর কর বসিয়েছে সরকার। অথচ সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে, সেগুলোর তোলার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার। অথচ শুধু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) যে পাওনা রয়েছে, তা দিয়ে বাজেটের অর্ধেক চাহিদা পূরণ করা যায়।’ তিনি বলেন, শুধু করের আওতা আর বোঝা না বাড়িয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা না বাড়িয়ে ধনীদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর